আস্থার সংকটে উল্টো পথে হাঁটছে পুঁজিবাজার, বেড়েছে লোকসান
শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। ফলে সবার একটাই প্রশ্ন কী ভাবে স্থিতিশীল হবে পুঁজিবাজার। পুঁজিবাজার স্থিতিশীল না হলে নতুন নতুন বিনিয়োগকারী বাজারে ফিরবে না। এমনকি পুরানো বিনিয়োগকারীরা আস্থা না ফিরলে নতুন করে বিনিয়োগ করবে না। ফলে কোনো ভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পুঁজিবাজার। একদিন উত্থান হলেও পরের কয়েকদিন টানা পতন হচ্ছে। এভাবেই চলছে দেশের পুঁজিবাজার। যার ফলে এই পতনে লোকসানের পাল্লা আরও ভারী হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দিনভর সূচকের উঠানামা করলেও দিনশেষে ১৩ পয়েন্ট সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছিল। তবে এক কার্যদিবসের ব্যবধানে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে সূচকের পতনে ২৫ পয়েন্ট সূচক উধাও হয়ে গেছে। যার ফলে উত্থান পতনের কারনে বাজার স্থিতিশীল হচ্ছে না। আর বাজার স্থিতিশীল না হলে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেরছে। এ কারনে লেনদেন বাড়ছে না। নিয়ন্ত্রক সংস্থার যে কোন মূল্যে বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, উচ্চ সুদহার, মূল্যস্ফীতি এবং ডলারের উচ্চ বিনিময় হারের কারণে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহ কমে গেছে। বিত্তশালীরা ব্যাংকের আমানত ও ট্রেজারি বন্ডকে বেশি নিরাপদ মনে করছেন। ফলে বাজারে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা লোকসানের শেয়ার বিক্রি করে বাজার ছাড়ছেন। আর ব্রোকার ও মার্চেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তারা চাকরি হারানোর শঙ্কায় আছেন।
এদিকে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমানে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৬২ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৩৫ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৩ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬৬ টির, দর কমেছে ২৮১ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬ টির। ডিএসইতে ৩১২ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৩৩৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৬৮ পয়েন্টে। সিএসইতে ১৭৬ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১১০ টির এবং ২৪ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।