দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে তার পরেই সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পাঁচই আগস্টের পর থেকেই অনেকটা ভোজবাজির মতো হাওয়া হয়ে গেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ‘শ্যুট অ্যাট সাইট’ তত্ত্ব দেয়া এই নেতা।

কথিত আছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পরে মূলত পাঁচ নেতা দল পরিচালনা করেছেন। শেখ হাসিনাকে ঘিরে রাখতের এই নেতারা। আর এই পঞ্চপাণ্ডবই ছিলো শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার মূল ক্রীড়ানক। মুলত পালাব কেন? কোথাও যাব না। প্রয়োজনে মির্জা ফখরুল সাহেবের বাসায় উঠব। কী; জায়গা দেবেন তো? ঠিক এ ধরনের বক্তব্যের কারণে বছরজুড়ে আলোচনায় থেকেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শেখ হাসিনার সরকার পতনের পেছনে যে কারণগুলো উল্লেখ করা হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বেফাঁস ও লাগামহীন বক্তব্য। একই সঙ্গে তিনি এবং তার সহযোগীদের দুর্নীতিও ছিল অন্যতম কারণ। কাদেরের এসব বক্তব্যে এবং তার গত আট বছরের (সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে) কার্যক্রমের কারণে দলে তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়ে।

অনেকের মতে, সরকার পতনের আগেই দলে ওবায়দুল কাদের প্রায় অপাঙ্ক্তেয় হয়ে পড়েন। সরকার পতনের পর দলে এখন আর তিনি প্রায়োজনীয় নন, এক রকম অনাবশ্যক হয়ে গেছেন আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই নেতা।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের প্রাচীনতম এ দলটির সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের মতো হাস্যকর ও সমালোচিত নেতা আর আসেননি। প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক থেকে ওবায়দুল কাদের পর্যন্ত অনেক নেতাই বিতর্কে জড়িয়েছেন। তবে হাস্যকর কর্মকাণ্ডের জন্য ওবায়দুল কাদের বেশি আলোচিত ও সমালোচিত।
টানা তিনবার সাধারণ সম্পাদক পদ পেয়েছেন কাদের। দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে খুশি করে চলায় কাদেরের শীর্ষ পদ যায়নি। ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে

আওয়ামী লীগে দীর্ঘদিন নতুন মুখ আসেনি। আসেনি সাংগঠনিকভাবে দক্ষ ও ক্যারিশম্যাটিক কোনো নেতা। কিন্তু যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে পারেনি ওবায়দুল কাদেরের একঘেয়েমি রাজনীতি। তারই মূল্য দিতে হয়েছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার মধ্য দিয়ে। সরকার পতনের পর দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বড় অংশে আলোচনা রয়েছে- ওবায়দুল কাদের এখন দলের জন্য অনিবার্য তো নয়ই, বরং বোঝা। তার জন্য দল ধীরে ধীরে ডুবছে। ওবায়দুল কাদের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য সারা দিন ব্যস্ত থাকতেন। গত ১৫ জুলাই এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত যেসব শিক্ষার্থী নিজেদের ‘রাজাকার’ বলে স্লোগান তুলেছেন, তাদের মোকাবিলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগই যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

দলের নেতা-কর্মীদের বড় অংশ মনে করেন, দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে থেকে কাদেরের এমন বক্তব্য দলের জন্য সাংঘাতিক ক্ষতি বয়ে এনেছে। যে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সময় পায়নি আওয়ামী লীগ। সে সময় দলের অভ্যন্তরীণ সভায় আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের কারণে ছাত্রলীগকে বিতর্কের মধ্যে ফেলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রেও ওবায়দুল কাদেরের ওই বক্তব্যকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। গত ২৯ জুলাই ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কাদেরের ওই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা হয়। যদিও নিজের বক্তব্যের পক্ষে সাফাই গেয়ে কাদের বলেছেন, তার বক্তব্যকে মিডিয়ায় ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

২০১৬ সালে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হন ওবায়দুল কাদের। সে সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরকে অনেক নেতাই মেনে নিতে পারেননি। সেই থেকে এখনো পদটি আঁকড়ে ধরে রেখেছেন তিনি। একই সঙ্গে সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পালন করেছেন ওবায়দুল কাদের। একাধিক পদের দায়িত্বে থাকায় দলে এবং মন্ত্রণালয়ের কোনোটিতেই যথাযথ সময় দিতে পারতেন না ওবায়দুল কাদের।

ফলে মন্ত্রণালয় ও দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে পিছিয়ে পড়েন প্রভাবশালী এই নেতা। এর সঙ্গে শারীরিক অসুস্থতার জন্য প্রতি মাসে দেশের বাইরে যেতে হতো কাদেরকে। তিনি দলের দায়িত্বে আসার পর থেকে আওয়ামী লীগে ‘কাউয়া ও হাইব্রিড’ শব্দগুলো চালু হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ওবায়দুল কাদের যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের কথা বলতেন ঠিকই, তবে নিজেই কাউয়া ও হাইব্রিড নেতাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। তার আমলে অনুপ্রবেশকারীদের আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ পাওয়ারও নজির রয়েছে।

ওবায়দুল কাদের সাবেক ছাত্রনেতা থেকে বর্তমানে মূল দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। অথচ তার আমলেই দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতাদের কদর কমে যায়। গত আট বছরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে সাবেক তুখোড় ছাত্রনেতাদের (সভাপতি-সম্পাদক) উল্লেখযোগ্যভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। শুধু তা-ই নয়, সাবেক ছাত্রনেতারা দলীয় কার্যালয়ে এলে তাদের নানাভাবে অপমান করা হতো। মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রেও একই কাজ করেছেন ওবায়দুল কাদের। এ নিয়ে একাধিকবার দলের মধ্যে সমালোচনা হয়। অনেকেই অভিমানে কার্যালয়ে যাতায়াত কমিয়ে দেন, না হয় বন্ধ করে দেন। অনেক নেতার রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ারও নজির রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বাকি ৮০ নেতার মধ্যে একধরনের মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। আড়ালে একে অন্যের নামে বিষোদ্গার করতেন। কাদের নিজেও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের বহু নেতাকে প্রকাশ্যে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছেন। ক্ষিপ্ত হয়ে অনেক নেতা আবার ওবায়দুল কাদেরকে গালমন্দও করেছেন।

দলের সাধারণ সম্পাদক ও দুটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রায় সময় এক থেকে দুই হাজার ছবি একযোগে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে শেয়ার করতেন। দলীয় নেতারা তার ছবির নিচে মন্তব্য করতেন ভাই এত হাজার হাজার ছবি তুলতে যে সময় লাগে তা যদি দলের জন্য ব্যয় করতেন; তাহলে আওয়ামী লীগের রাজনীতির এত খারাপ পরিণতি হয় না! একাধিক দায়িত্বে থাকার কারণে প্রায় প্রতিদিনই সংবাদ সম্মেলন ডাকতেন ওবায়দুল কাদের। আর এসব সম্মেলনে অপ্রাসঙ্গিক বক্তব্য রাখতেন তিনি। দলীয় সভা-সমাবেশে বিরোধী রাজনৈতিক দল ও দলের নেতাদের নিয়ে হাস্যরসাত্মক বক্তব্য দিতেন, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতো।

যেমন, খেলা হবে। আপনারা খেলার জন্য প্রস্তুত?’; জ্বালা হায়রে জ্বালা, অন্তরে জ্বালা; ‘ভালো হয়ে যাও মাসুদ, ভালো হয়ে যাও’; ‘ওরা কারা-কোথা থেকে এল’; ‘পালাব না, কোথায় পালাব? পালাব না, প্রয়োজনে ফখরুল সাহেবের বাসায় গিয়ে উঠব। কী জায়গা দেবেন তো? না হলে ঠাকুরগাঁওয়ের যে বাড়ি আছে না, ওই বাড়িতে গিয়ে উঠব।’ (সরকার পতনের পর মির্জা ফখরুলও এই বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন); ‘একটুও বলব না, একটা শব্দও বলব না।

কেন দশটা মিনিটও সহ্য হয় না?’; ‘২৮ থেকে ৪ তারিখ কতদিন হলো? ২৮ তারিখের পর তো শেখ হাসিনা নেই, হায়রে মির্জা ফখরুল! হায়রে হায়! টেলিভিশনে দেখলাম খালি দৌড়াচ্ছে’; ‘মঞ্চে সব নেতা। পুরা নেতা, আধুলি নেতা, সিকি নেতা, পাতি নেতা। নেতায় নেতায় স্টেজ ভাঙে’ ইত্যাদি। সংবাদ সম্মেলনে দলের অথবা মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট প্রশ্নে, যা তার বিপক্ষে গেলেই ক্ষেপে যেতেন ওবায়দুল কাদের। উত্তর না দিয়ে নিজেই সাংবাদিককে পাল্টা প্রশ্ন করে বসতেন কাদের। তা নিয়েও সমালোচনা হয়েছে।

দলীয় সূত্র বলছে, সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদেরও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাবেক ছাত্রনেতা ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের প্রকাশ্যে অপমান করার নজিরও রয়েছে। তা নিয়ে আবার আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের হাতিহাতি হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা, এমনকি নিজের উপজেলার নেতারা দেখা করতে এলে তাদের প্রকাশ্যে গালমন্দ করেছেন তিনি।

বিশেষ করে তৃণমূলের নেতারা দলীয় দপ্তরে কোনো অভিযোগের কাগজ জমা দিতে এলে ওই নেতাদের মুখে তা ছুড়ে মারার নজিরও রয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সময় তৃণমূলের নেতারা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তার প্রটোকল বাহিনীর সদস্যরা নানাভাবে হেনস্তা করতেন। এই নিয়ে কার্যালয় থেকে বের হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অনেক নেতাই বলেছেন- সৈয়দ আশরাফের (সাবেক সাধারণ সম্পাদক) আমলে আওয়ামী লীগ ভালো ছিল। ওবায়দুল কাদের দলের জন্য ক্ষতিকর।

আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসতে ওবায়দুল কাদেরের অযোগ্যতাই বেশি দায়ী। প্রতিনিয়ত ব্যক্তিত্বহীন আচরণ ও অদূরদর্শী বক্তব্য দিয়ে তিনি নিজেকে বিতর্কিত করেছেন। এমনকি বিতর্কিত করেছেন ঐতিহ্যবাহী দলের সাধারণ সম্পাদক পদটিকেও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্র-জনতার আন্দোলন মোকাবিলা করা ছিল ওবায়দুল কাদেরের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ঢাকা মহানগর থেকে শুরু করে সারা দেশে আওয়ামী লীগকে দ্বিধা-বিভক্ত করেছেন ওবায়দুল কাদের। তার আমলেই জেলা এবং উপজেলার চেয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে।

মহানগর উত্তর-দক্ষিণের থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও দলের সহযোগী সংগঠনের কোনো কমিটি নেই। এমন বাস্তবতায় মহানগর আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য তাকে বলা হয়। নেতা-কর্মীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করলে দলের মধ্যে বিরোধ আরও বাড়ে। তার সামনেই পক্ষে-বিপক্ষে তর্কাতর্কি করেন নেতা-কর্মীরা। এক নেতা আরেক নেতাকে মারতে যান। এসব সামাল দিতে না পারায় একপর্যায়ে ওবায়দুল কাদেরকেও তোপের মুখে পড়তে হয়। কাদেরের দুর্বলতা নিয়েও নেতা-কর্মীরা বলতে থাকেন। যার ফলে ছাত্র-জনতার আন্দোলন মোকাবিলায় উল্লেখ্যযোগ্যভাবে সাড়া মেলেনি নেতা-কর্মীদের।

টানা তিনবার দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকলেও ওবায়দুল কাদের তৃণমূলে বরাবরই বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা এবং বিভাগীয় বর্ধিত সভা ঢেকে কাউকে কথা বলতে দিতেন না। কেউ সাংগঠনিক বিষয়ে কথা বলতে চাইলেও তাকে অপমান করে মুখ বন্ধ করে দিতেন। এই নিয়ে সাবেক ছাত্রনেতা ও মহানগরের নেতারা দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ জানিয়ে আসছিলেন।

সরকার পতনের আগে গত ৩১ জুলাই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন মোকাবিলা করতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে মতবিনিময়ের উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ। সভায় ওবায়দুল কাদের সাবেক ছাত্রনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন বলে দলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে এক দিন আগে জানানো হয়। কিন্তু বরাবরের মতো ওই সভায়ও ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে মতবিনিময় সভা মুলতবির ঘোষণা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাবেক ছাত্রনেতারা তাকে ঘিরে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন।

তাদের থামাতে চাইলে ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে নেতারা বলতে থাকেন, ‘মতবিনিময় সভা ডেকে সংবাদ সম্মেলন করছেন কেন? তাহলে আমাদের ডাকলেন কেন? আগে আমাদের কথা শুনবেন, আলোচনা করবেন, তারপর ব্রিফ করেন। তা না করে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলা শুরু করে দিলেন! সভা শেষে বের হতে চাইলে তাকে ঘিরে ফেলেন সাবেক ছাত্রনেতারা। পরে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাহায্যে কার্যালয় থেকে বের হতে পারেন।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দীর্ঘদিন যারা ওবায়দুল কাদেরকে তোষামোদ করে সুবিধা নিয়েছেন, তারাও কাদেরের দুঃসময়ে কাছে নেই। দলের কোনো সিদ্ধান্তে ওবায়দুল কাদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ নানা কায়দা করে স্ত্রীসহ কলকাতায় পৌঁছান তিনি। তবে দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা হয়েও কেউ কাদেরের খোঁজ নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ জানান কাদের। তবে তার ডাকে সাড়া দেননি শেখ হাসিনা।