দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানোর জন্য যথেষ্ট সহায়তা করছে সরকার। নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে, আইসিবিকে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে এসব তো আস্থা ফেরাতেই করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর নিকুঞ্জে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ভবনে পুঁজিবাজারে চলমান সংকট নিরসনে করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, পৃথিবীর বড় বড় দেশগুলোতে ইন্ডাস্ট্রিগুলোর জন্য লং টার্ম ফাইন্যান্সিং পুঁজিবাজার থেকে আসে। ব্যাংকের টাকা হলো জণগণের জমা করা টাকা। প্রত্যেক দেশে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ পুঁজিবাজার থেকে আসে, ব্যাংক থেকে নয়। ব্যবসায়ী গুলিকে তাদের সমস্ত তহবিলের জন্য শুধুমাত্র ব্যাংকের উপর নির্ভর করা উচিত নয়। তাদের অন্তত ২০-৩০ শতাংশ নিজস্ব থাকা উচিত। সবকিছু যদি ঋণের উপর ভিত্তি করে হয়, তাহলে কিভাবে কাজ করবে?

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে আমরা পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের থেকে তাদের সুবিধা অসুবিধাগুলো শুনেছি। ইতিমধ্যে এগুলোর মাঝে কতোগুলো সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। আপনারা অনেক সময় দেখেন যে পুঁজিবাজার পরে গেছে। এর কারণ বাজার রিফর্ম হচ্ছে। কারও উপকার করার জন্য এখানে কোন পলিসি নেয়া হয়নি, যা অতীতে হয়ে ছিলো।

তিনি বলেন, শুধু মাত্র রাষ্ট্রীয় কোম্পানিগুলোই নয়, বিদেশী কোম্পানি এবং পরিবার-পরিচালিত কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে উৎসাহিত করা উচিত। বাজারে ভালো কোম্পানির সংখ্যা না বাড়ালে ভিত্তি বাড়বে কীভাবে? বিনিয়োগকারীরা কোথায় বিনিয়োগ করবে? দেশি, সরকারি, বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করার জন্য কাজ করছি। এছাড়া বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বর্তমানে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি।

এখন শুধু সংস্কার করা হচ্ছে। আমরা নতুন কোনো নীতি তৈরি করছি না। আমরা আগের মতো এগোবো না। বিএসইসি এবং ডিএসইতে এখনও যারা অসদাচরণে জড়িত তাদের ব্যবস্থাও নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা নিশ্চিত যে বাজারের উন্নতি হবে।

ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল), সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) প্রতিনিধিরা।