৩ বছরে ৮ বার ডিএসই’র টেকনিক্যাল ত্রুটিতে লেনদেন বিঘ্নিত
আলমগীর হোসেন, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: প্রযুক্তিগত বা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত ৫ই জানুয়ারী দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রায় দেড় ঘণ্টা বন্ধ ছিল। ফলে ফের সার্ভার সমস্যার কারণে সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ডিএসইতে নির্ধারিত সময়ে ডিএসইতে লেনদেন শুরু করা সম্ভব হয়নি। তবে অল্প সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করে এরই মধ্যে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার কথা। তবে এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় ১০টা ১০ মিনিট থেকে।
এর ফলে একই কারণে গত তিন বছরে ৮ বার, আর গত এক দশকে ১৩ বার বিঘ্নিত হয়েছে পুঁজিবাজারের কার্যক্রম। মূলত স্টক এক্সচেঞ্জের অদক্ষতা, চেষ্টা ও উদ্যোগের অভাবেই এমনটি ঘটছে। কারণ মাত্র ৮ কার্যদিবসের ব্যবধানে আবারও দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সার্ভার জটিলতায় লেনদেনে বিঘ্ন ঘটেছে।
এ বিষয়ে একটি ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, লেনদেন শুরুর সময়ে লেনদেন করতে গিয়ে দেখি লেনদেন হচ্ছে না। কী সমস্যা হয়েছে বুঝতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে ১০টা ১০ মিনিট থেকে লেনদেন করা সম্ভব হয়েছে। বাজারে এমনিতেই মন্দা অবস্থা। এর মধ্যে প্রায় প্রায় লেনদেনে বিঘ্ন ঘটলে তা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা দেয়। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয়।
লেনদেনে বিঘ্ন ঘটার কারণ জানতে চাইলে ডিএসইর উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুর রহমান বলেন, একটা সার্ভারে সামান্য সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের আইটি বিভাগ দ্রুত সমস্যার সমাধান করেছে এবং লেনদেন শুরু হয়েছে। পাঁচ মিনিটের মতো লেনদেনে সমস্যা হয়েছিল। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ডিএসইতে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর লেনদেন শুরু হয়। তার প্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়ের থেকে আধাঘণ্টা বেশি অর্থাৎ দুপুর ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত লেনদেন চলে ওইদিন।
একাধিক বিনিয়োগকারীর অভিযোগ, বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। ফলে আমরা চরম হতাশ। বারবার যান্ত্রিক ত্রুটি যুক্তিযুক্ত নয়, আর এটি প্রায়ই ঘটছে। এভাবে ঠিকমতো চালানো হয় না, নাকি অন্য উদ্দেশ্য আছে তা জানি না। কিন্তু দিনের শেষে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এর আগেও ডিএসইর লেনদেনে কারিগরি ত্রুটির কারণে একাধিকবার বিঘ্নিত হয়েছে।
২০২৪ সালের ১০ মার্চ ত্রুটির কারণে সূচকে অস্বাভাবিক পরিসংখ্যান দেখা যায় এবং ২০২৩ সালের আগস্টে ফ্লেক্সট্রেডে ত্রুটির কারণে শেয়ার কেনাবেচার নিষ্পত্তি পরদিন ভোরে হয়। ২০২২ সালের অক্টোবরেও এক সপ্তাহে দুবার কারিগরি ত্রুটি ঘটে। এসব কারণে বিএসইসি ডিএসইর সিটিওকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর সাবেক সিটিও জিয়াউল করিম বলেন, বারবার এ ধরনের সমস্যা হওয়া উচিত নয়।
এ বিষয়ে ডিএসইর একজন সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ব্যবহৃত প্রযুক্তি পুরোনো, যা নিয়ে ডিএসইর কর্মকর্তারা হয়তো একমত হবেন না। একটার পর একটা হার্ডওয়্যার অ্যাড করা হচ্ছে। তবে এটি পরিবর্তনের পরিকল্পনা করেছিলাম। দায়িত্বে থাকলে অবশ্যই তা করতাম।