আরামিট সিমেন্টের ব্যাংক লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ
চট্টগ্রাম ব্যুরো, দেশ প্রতিক্ষণ: প্রায় ১৫ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানি আরামিট সিমেন্ট লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত।জাবেদের স্ত্রী রুকমিলা জামান খেলাপি ঋণে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান আরামিট সিমেন্ট পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন বলে আদালতটির বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনের আগে তার বিরুদ্ধে বিদেশে বিপুল সম্পদ গড়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর নির্বাচন পরবর্তী গঠিত মন্ত্রিসভায় তাকে আর দেখা যায়নি। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগ মূহুর্তে জাবেদ স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে লন্ডনে পাড়ি জমান বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
মামলার নথি পর্যালোচনায় জানা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে ঋণ নেয় তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান আরামিট সিমেন্ট লিমিটেড। পরিশোধ না করায় সেই ঋণ খেলাপিতে পরিণত হলে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর রুকমিলাসহ সাতজন এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরামিট সিমেন্টকে বিবাদি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন ব্যাংক এশিয়ার ফার্স্ট অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাসুদুল ইসলাম। তবে সেসময়কার মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে মামলায় বিবাদি করা হয়নি।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর ব্যাংক এশিয়ার পক্ষ থেকে আদালতকে অবহিত করা হয় যে, আরামিট সিমেন্টকে দেয়া ঋণের বিপরীতে তাদের মোট পাওনা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৭ টাকা ৬৩ পয়সা। এ ঋণের বিপরীতে বিবাদিদের কোনো সম্পত্তি ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই। এছাড়া ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিবাদিরা দেশত্যাগ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে।
এ অবস্থায় ব্যাংক এশিয়ার পক্ষ থেকে পাওনা আদায়ে আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল), বহদ্দারহাট শাখায় থাকা একটি ব্যাংক হিসাব ক্রোকের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, ‘আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আদালত ইউসিবিএল ব্যাংকের হিসাব নম্বরটিতে সব ধরনের লেনদেন স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে যাবতীয় হিসাব কেন ক্রোক করা হবে না, সেটা জানাতে বিবাদিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ ইস্যুর নির্দেশ দিয়েছেন। ২০ জানুয়ারি কারণ দর্শানোর জবাব দিতে হবে। একইদিন সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে এক বছরের হিসাব বিবরণী জমা দেয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’