সূচকের উঠানামার মধ্যে স্থিতিশীলতার পথে হাঁটছে পুঁজিবাজার

শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা দুই কার্যদিবস দরপতনের পর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের কিছুটা উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সূচকের উত্থান হলেও লেনদেন কমেছে প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। মুলত ফেব্রুয়ারী মাস থেকে সূচকের উঠানামার মধ্যে দিয়ে লেনদেন হচ্ছে। একটানা যেমন সূচকের উত্থান হচ্ছে না, তেমনি একটানা সূচকের পতন হচ্ছে না। কারণ সূচকের উঠানামার মধ্যে স্থিতিশীলতার পথে হাঁটছে পুঁজিবাজার।
ত দুই সপ্তাহ ধরে সূচকের উঠানামার মধ্যে দিয়ে স্থিতিশীলতার আভাস দিচ্ছে পুঁজিবাজার। তেমনি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস সূচকের পতন হলেও তৃতীয় কার্যদিবসে আবার সূচকের উত্থান হয়েছে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক কোম্পানি। এতে বাজারটিতেও প্রধান মূল্যসূচক কিছুটা বেড়েছে। তবে ডিএসইর মতো এই বাজারেও কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাজার যেমন একটানা উত্থান হচ্ছে না তেমনি একটানা পতন হচ্ছে না। এ ভাবে উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে স্থিতিশীল হবে পুঁজিবাজার। এছাড়া বর্তমান বাজারের স্বার্থে আইসিবির নতুন কোনো ফান্ডের জোগান দিয়ে পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। যদিও অতি সম্প্রতি আইসিবিকে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর থেকে কত টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হয়েছে সেটিও খতিয়ে দেখা উচিত বলে তারা মনে করেন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারের জন্য শুধু কর অব্যাহতি চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যাবে না। প্রতিবছর প্রাক বাজেট প্রস্তাবনায় ডিএসই, সিএসই, ডিবিএসহ সব অংশীজন বাজেটে যে প্রস্তাবনা দিয়ে থাকে তা বড় শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের জন্য। এখানে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো সুযোগ রাখা হয় না। ফলে এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমে গেছে।
আসন্ন বাজেট প্রস্তাবনায় সব পক্ষ থেকে মূলধনী আয়ের ওপর করহার ১৫ শতাংশের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ, কর রেয়াতের পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে বিনিয়োগসীমা বৃদ্ধি, ভালো মৌলভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত করা ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর ব্যবধান কমপক্ষে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়।
বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, এখন সব জায়গাতেই সংস্কার হচ্ছে। বিএসইসিতে সংস্কার হয়েছে। ডিএসইতে নতুন নেতৃত্ব এসেছে। তার পরও বাজেটে কোনো সংস্কার আসেনি। সেই একই প্রস্তাব কর অব্যাহতি, তালিকাভুক্ত- নন তালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের পার্থক্য বৃদ্ধি। কিন্তু যখন বাজেট ঘোষণা করা হয় তখন সরকার যা ভেবেছে সেটিই হতে দেখা গেছে। পুঁজিবাজারে এখন যে অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাতে এ বাজারে এখন নতুন বিনিয়োগ প্রয়োজন।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২১০ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৫৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮৮২ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৮ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৮৬ টির, দর কমেছে ১৫৬ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬ টির। ডিএসইতে ৪৫১ কোটি ১৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৫৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫০৫ কোটি ১৬ লাখ টাকা ।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫৬৯ পয়েন্টে। সিএসইতে ২০৬ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৮ টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮৭ টির এবং ৩১ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।