শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের কিছুটা উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে সূচকের কিছুটা উত্থান হলেও বাজার নিয়ে আতঙ্ক কাটছে না। তাছাড়া টানা চার কার্যদিবস দরপতনের পর অবশেষে সূচকের উত্থানের দেখা মিললো। এদিন মিউচুয়াল ফান্ড শেয়ারের প্রফিট টেকিংয়ের চাপ থাকলেও কিছু কিছু খাতের শেয়ারের একচেটিয়া প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। একই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে আবার ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, এর আগের ঈদের পর প্রথম কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে ঢালাও দরপতন হলেও প্রায় সবকটি মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ে। এতে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় পুঁজিবাজার। তবে একদিন পরেই গত সোমবার অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দরপতন হয়। যার প্রভাবে সার্বিক পুঁজিবাজারেও পতনের পাল্লা ভারী হয়। অবশ্য পরের কার্যদিবস গত মঙ্গলবার আবার অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের দাম বাড়ে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্তমান বাজার প্রসঙ্গে বিএলআই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের এখনই উপযুক্ত সময়। তবে আওয়ামীলীগ সরকারের দীর্ঘ দিনের দু:শাসন-অপশাসনের কারণে বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে নেতিবাচক মন-মানসিকতা তৈরি হয়েছে। বাজারে একটা সময় নৈতিকতার অভাব যথেষ্ট ছিল। যে-কারণে অনেক বিনিযোগকারী বাজার থেকে চলে গেছে। মোটাদাগে তারা এখন পর্যন্ত ফিরে আসেনি।

এর মধ্যে কিছু বিনিয়োগকারী ফিরে এসেছে। সম্প্রতি বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাজারের টার্নওভার কিছুটা বেড়েছে। তবে তা যথেষ্ট নয়। ফলে বলতেই পারি বাজার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে এখনও আস্থাহীনতা রয়েছে। বাজারের প্রতি মানুষের অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। বাজারের সুশাসনের প্রতি অবিশ্বাস, নৈতিকতার প্রতি অবিশ্বাস, সরকারের নজরদারির প্রতি অবিশ্বাস এবং বাজারের প্রাথমিক গণপ্রাস্তাবের (আইপিও) প্রতি বিনিয়োগকারীদের মনে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এসব কারণের বাজারের পতন হয়েছে। তবে শিগরিই বাজার ঘুরে দাঁড়াবো।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত তিন বছরের বেশি সময় যাবত আমাদের পুঁজিবাজার ধারাবাহিক মন্দায় তলালিতে এসে এখন দম নিচ্ছে। এ বাজারে ট্রাম্পের শুল্কনীতির চাপের প্রভাব আর পড়ার জায়গা নেই। যে কারণে খুব বড় অঘটন দেখা যায়নি।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯২১ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৫ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৪ টির, দর কমেছে ১৯৩ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৮ টির। ডিএসইতে ৫২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৮৩ কোটি ৬১ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৫৩০ পয়েন্টে। সিএসইতে ২১৯ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১০৩ টির এবং ৩১ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।
শেষের পাতা ২ কলাম