পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে বাজেটে করছাড়ের আভাস

দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: স্মরণকালের সবচেয়ে গভীর মন্দায় থাকা পুঁজিবাজারে প্রাণ ফেরাতে আগামী অর্থবছরের বাজেটে করছাড়ের আভাস মিলেছে। একইসঙ্গে ব্যক্তি করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তুতিও চলছে। বর্তমানে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় করমুক্ত থাকলেও তা আরও ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত সোমবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে যমুনায় তাঁর বাসভবনে অনুষ্ঠিত এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান সেখানে বাজেটের শুল্ক ও করসংক্রান্ত প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নতুন কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করতে শর্ত সহজ করার পাশাপাশি করছাড়ের সুযোগ দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। এতে বাজারে নতুন কোম্পানি যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, আগামী বাজেটে কর পরিশোধের প্রক্রিয়াকে সহজ করা এবং করবান্ধব পরিবেশ তৈরির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়াকে উৎসাহিত করা হবে এবং কোম্পানির ক্ষেত্রে অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার চিন্তাও রয়েছে বাজেটে।
বৈঠকে আরও আলোচনা হয়, ব্যক্তি করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর সিটি করপোরেশন, পৌর ও গ্রামাঞ্চল নির্বিশেষে পাঁচ হাজার টাকায় নির্ধারণের। বর্তমানে এই পরিমাণ এলাকাভেদে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে।
এছাড়া, যেসব প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক টার্নওভার তিন কোটি টাকার বেশি, তাদের জন্য লাভ-লোকসানের বিবেচনা ছাড়াই বর্তমানে ০.৬ শতাংশ হারে যে ন্যূনতম কর রয়েছে, তা বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাবও আলোচনায় আসে। ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) নিয়েও পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে। ফ্রিজ ও এয়ারকন্ডিশনের স্থানীয় উৎপাদনে ভ্যাট হার ৭.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হতে পারে।
মোবাইল ফোন উৎপাদন ও বিক্রিতে মূল্য সংযোজন অনুসারে ভ্যাট বৃদ্ধির সম্ভাবনাও রয়েছে। বাজেট প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়িত হলে একদিকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অনুপ্রেরণা বাড়বে, অন্যদিকে করব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও পরিধি বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।