খরার পুঁজিবাজারে বেক্সিমকো ফার্মার একক আধিপত্য
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহজুড়ে লেনদেন খরায় বেক্সিমকো ফার্মা একাই একশ অনেকটাই এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রতিদিনই লেনদেনের বড় অংশজুড়ে থাকছে এ প্রতিষ্ঠানটি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মোট লেনদেনের প্রায় ৯ শতাংশ নিজের দখলে নিয়ে গত সপ্তাহে লেনদেনের শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের এ প্রতিষ্ঠান। আগের সপ্তাহেও মোট লেনদেনের ৯ শতাংশের ওপরে ছিল কোম্পানিটির দখলে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ২৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা বাজারটির মোট লেনদেনের ৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ। আগের সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয় ৩২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন পরিমাণ কমেছে ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ফ্লোর প্রাইজ থাকবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমলেও শীর্ষ স্থানটি ধরে রেখেছে বেক্সিমকো ফার্মা। কিন্তু অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো বেক্সিমকো ফার্মার সঙ্গে তালমিলাতে পারছে না। ফলে শেয়ারবাজারেও লেনদেন খরা কাটছে না। উল্টো প্রতিনিয়ত লেনদেন কমে খাদের কিনারে যাচ্ছে শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৩ কোটি ১ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৩৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩৫৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা বা ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ।
গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের মধ্যে ‘এ’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দাঁড়িয়েছে ৯৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এছাড়া ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘বি’ গ্রুপের অবদান ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। ‘জেড’ গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের অবদান দশমিক ৭১ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের অবদান দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
এদিকে গত কয়েক সপ্তাহের মতো গত সপ্তাহেও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া মাত্র ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ৩৯টির। আর ২৮৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে পতন হয়েছে মূল্য সূচকের। এতে প্রায় দুইশ কোটি টাকার মতো হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ১০ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ১০ হাজার ৬৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৭৮ কোটি টাকা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘুষ নিয়ে করোনা পরীক্ষা!
এদিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট। বাকি দুটি সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ১ দশমিক ২৩ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ৩ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট। আর ডিএসই-৩০ কমেছে ৬ দশমিক ৩২ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে ১০ দশমিক ২৬ পয়েন্ট।
বেক্সিমকো ফার্মার পর গত সপ্তাহে সব থেকে বেশি লেনদেন হয় লিন্ডে বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ। ৯ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ন্যাশনাল ব্যাংক, রেকিট বেনকিজার, বাংলাদেশ সবমেরিন কেবলস, বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো), সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, এক্সিম ব্যাংক এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।