আস্থা সংকটের কারণে ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না পুঁজিবাজার
শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: টানা পতনের বৃত্তে আবার দেশের পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস টানা দরপতনের পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসেও সূচকের বড় দরপতনে ফের আস্থা সংকট দেখা যায়। বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন নতুন করে গত তিন কার্যদিবস দরপতনের কারণ কী, বাজারকে নানা গুজব ছড়িয়ে একটি চক্র বার বার ফায়দা লুটছে। এরা একেক সময় একেক গুজব ব্যবহার করছে। তবে সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের দরপতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।
এদিন অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর কমলেও বিপরীত পথে হেটেছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। তবে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম বৃদ্ধি পরও দরপতন ঠেকাতে পারেনি। গত তিন কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছে ১১২ পয়েন্ট। এদিন সূচকের সাথে কমেছে টাকার পরিমাণে লেনদেন ও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, বর্তমান পুঁজিবাজারের মুল সমস্যা আস্থা সংকট। দীর্ঘদিন থেকে পুঁজিবাজারের সার্বিক অবস্থা ভালো না থাকায় আস্থার সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। কিন্তু বাজারে এমন কোনো পরিস্থিতি হয়নি, যার জন্য লাগাতার পতন হতে পারে। মূলত বিনিয়োগকারীরা ভয় পেয়ে পেনিক সেল করছেন, যার প্রভাবে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।
তাদের শেয়ার বিক্রির চাপে বাজারে নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের মনোগত কারণে পতন আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় পুঁজিবাজারে টানা সূচকের উত্থানের বিকল্প নেই। সূচকের টানা উত্থান হলেও আস্থা ফিরে আসবে বিনিয়োগকারীদের মাঝে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে একেক সময় এক গুজব চলছে, গত সপ্তাহের শেশের দিকে গুজ ছিলো ৩ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার তুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে এসব গুজবের কোন ভিত্তি নেই। আবার নতুন করে চীন থেকে কাংখিত আর্থিক সহায়তা না পেয়ে বাজার নেতিবাচক অবস্থার দিকে ধাবিত হয়েছে এমন গুজব চলছে। প্রকৃতঅর্থে যার কোনো যুক্তিসংগত ভিত্তি নেই। তবে আশা করছি, আগামী ২-১ দিনের মধ্যেই বাজার ঘুরে দাঁড়াবে।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৮২ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২০২ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৩৭ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৭০ টির, দর কমেছে ২৯৭ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০ টির।
ডিএসইতে ৬২২ কোটি ২৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪২ কোটি ৩ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার। অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬৬১ পয়েন্টে। সিএসইতে ২২৮ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৬ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৬৫ টির এবং ১৭ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।