আতঙ্ক কাটছে না, আস্থার সংকটে হাহাকার পুঁজিবাজার
আবদুর রহমান, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের উঠানামার মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে টানা তিন কার্যদিবস দরপতনের পর বাজার কিছু ঘুরে দাঁড়ালোও অধিকাংশ শেয়ারের ক্রেতা সংকট দেখা যায়। ফলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সবকটি মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। তবে দাম বাড়ার তালিকায় যে কয়টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট স্থান করে নিয়েছে, তার চেয়ে বেশি কোম্পানির স্থান হয়েছে দাম কমার তালিকায়। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউজ ঘুরে একাধিক বিনিয়োগকারীর সাথে আলাপকালে বলেন, টানা দরপতনের পর ঈদের পর থেকে বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও গত চার কার্যদিবসে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতনে ১২ শতাংশ উধাও হয়ে গেছে। বর্তমান বাজারের মুল সমস্যা আস্থা সংকট। আস্থা সংকট দুর করতে না পারলে বাজার স্থিতিশীল ও টেকসই হবে না। কারণ টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক কাটছে না। আতঙ্ক কাটাতে হলে বাজারে সূচকের টানা উত্থানের বিকল্প নেই।
অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী প্রভাষক কাজী হোসাইন আলী বলেন, গত আড়াই বছরের টানা দরপতনে অধিকাংশ বিনিয়োগকারীদের মাঝে পুঁজিবাজার নিয়ে নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বাজারে বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছে না। এজন্য আস্থা সংকট দুর করলেও বাজারে দ্রুত লেনদেন বাড়বে।
পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজারে মূল সমস্যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার সংকট। এই সংকট কাটাতে উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি ভালো শেয়ারের সরবরাহ বাড়াতে হবে। না হলে দীর্ঘমেয়াদে বাজার টেকসই হওয়া কঠিন।
জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৮৪ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক.৭২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২০৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৪৪ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৪০ টির, দর কমেছে ১৯১ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৬ টির। ডিএসইতে ৬৬২ কোটি ২৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৩৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা বেশি। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৬২২ কোটি ২৫ লাখ টাকার।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৬৩২ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৪৬ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৫ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৪৩ টির এবং ২৮ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।