শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: শেখ হাসিনা সরকারের পতন পর থেকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীরা নতুন স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন। তবে গত চার কার্যদিবস সূচকের বড় উত্থানে আস্থা ফিরে আসে বিনিয়োগকারীদের মাঝে। তবে সপ্তাহের দ্বিতীয় ও তৃতীয় কার্যদিবসে সূচকের বড় দরপতনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা।

বিনিয়োগকারীদের প্রশ্ন সূচকের কারেকশন নাকি ফের কারসাজির খপ্পরে পুঁজিবাজার। এরকমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সিকিউরিটিজ হাউজগুলোতে। কারণ এর আগেও এরকমন কয়েক বার সূচকের বড় উত্থান হলেও পুঁজিবাজার স্থিতিশীল হয়নি। ফলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রথম চার কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচক বেড়েছে ৭৮৬ পয়েন্ট।

এই চার কর্মদিবসে যারা শেয়ার কিনেছেন, তাদের অনেকেই বিনিয়োগের উপর ২০-৩০ শতাংশ মুনাফায় করছেন। কারণ সূচকের বড় উত্থানে অধিকাংশ ব্যাংকের শেয়ারের দর বেড়েছে। ফলে গত সোমবার থেকে মুনাফায় থাকা বিনিয়োগকারীরা তাদের মুনাফা তোলা শুরু করলে বাজার বড় সংশোধন দেখা যায়। এদিন ডিএসইর সূচক কমে যায় ৮৩ পয়েন্টের বেশি।

এরপর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে মুনাফা থাকা বিনিয়োগকারীরা মুনাফা তোলার পথেই ছিলেন। যে কারণে পুঁজিবাজার বড় দরপতনের পথে ছিল। আজ ডিএসইর সূচক কমেছে ৬৪ পয়েন্টের বেশি। যার ফলে ডিএসইর চার কার্যদিবসে সূচক বেড়েছিল ৭৮৭ পয়েন্ট। আর দুই কর্মদিবসে মুনাফা তোলার চাপে সূচক কমেছে প্রায় ১৪৮ পয়েন্ট।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার জায়গা ব্যাংক ও আর্থিক খাত। তবে গত দুই কার্যদিবস ব্যাংক ও আর্থিক খাতের নেতিবাচক খবরে শেযারের দরপতন ঘটে। এর কারণ হলো, গত দুই দিন যাবত ব্যাংক ও আর্থিক খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে এখাতের অংশীজনেরা নেতিবাচক সমালোচনায় মুখরিত ছিলেন। সিপিডি দাবি করেছে, ২৪ ব্যাংকের কেলেঙ্কারিতেই ৯২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে।

এই খবর পুঁজিবাজারে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে তারা মনে করেন। যার ফলে উত্থানের বাজারে হঠাৎ ছন্দপতন দেখা দিয়েছে।
এদিকে সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ও টাকার পরিমাণে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৮৬৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই–৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১৩৪ পয়েন্টে।

দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৯ কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৬ টির, দর কমেছে ২৬৯ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪ টির। ডিএসইতে ১ হাজার ১৫ কোটি ১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১২৮ কোটি ১ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৪৩ কোটি ২ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৪৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৯ পয়েন্টে। সিএসইতে ২৪২ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৮ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১৬৮ টির এবং ১৬ টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ১৫ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।