শহীদুল ইসলাম, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মূল্য সূচকের মিশ্র প্রবণতায় মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে সূচকের উঠানামার মধ্যে দিয়ে লেনদেন চললেও দিনশেষে সূচক বেড়েছে ১৮ পয়েন্ট। একই দিনে লেনদেন হয়েছে ৪৮১ কোটি টাকা। যা ডিএসইতে ২৯ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন। এর আগে গত ১৮ আগস্ট ৪৮০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরও আস্থা সংকট কাটছে না। বরং আস্থা ও তারল্য সংকটে হাহাকার চলছে পুঁজিবাজারে। ফলে বিএসইসির পুঁজিবাজার ইস্যুতে কোন যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত না থাকায় বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। ফলে বাজার ঘুরে না দাঁড়ানোর নেপথ্যে রয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থার হুটহাট সিদ্ধান্ত। বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান যোগদানের পর থেকে গত একমাসেও বিনিয়োগকারীদের একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার উপহার দিতে পারেনি।

বরং বিএসইসি গত এক মাসে হুটহাট সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীরা বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথমত মার্কেট মেকারের গনহারে তদন্ত কমিটি গঠন ও ২৮ কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরি ইস্যুতে স্থানান্তর। ফলে বিএসইসি এসব সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে আস্থা সংকট আরো বাড়ছে বলে মনে করছেন একাধিক বিনিয়োগকারীরা।

‘বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত পরিষদ’ এর সভাপতি আ ন ম আতাউল্লাহ নাঈম জানান, পুঁজিবাজার সংক্রান্ত সব প্রতিষ্ঠানে ঘাপটি মেরে আছে বিগত সরকারের সুবিধাভোগীরা। ছাত্র-জনতার সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং পুঁজিবাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে আগের কমিশনের জেড ক্যাটাগরি সংক্রান্ত উদ্যোগ বাস্তবায়নে অসৎ উদ্দেশ্য আছে কি না, তা খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই। তিনি গত এক মাসে পুঁজিবাজার বান্ধব কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। বরং তালিকাভুক্ত ২৮টি কোম্পানিকে জেড ক্যাটাগরিতে পাঠানোর কারণে শেয়ারধারীরা মূলধন হারাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। এই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি ওই কোম্পানিগুলোর পরিচালকদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যেতে পারে। কোম্পানি সম্পর্কিত নন-কমপ্লায়েন্সের জন্য পরিচালকদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে কমপ্লায়েন্স ঠিক করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ডিভিডেন্ড বিতরণের অনিয়ম দূর হবে।

সূত্র মতে, দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১৮ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বেড়েছে। বর্তমানে সূচকটি অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬৫৮ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ২৭১ পয়েন্টে এবং ডিএসই ৩০ সূচক ২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ৬২ পয়েন্টে।
দিনভর লেনদেন হওয়া ৩৯৭ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৩ টির, দর কমেছে ২০৫ টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯ টির। ডিএসইতে ৪৮১ কোটি ৩১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবস থেকে ৪৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকার।

অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭৬৫ পয়েন্টে। সিএসইতে ২০৬ টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৫ টির দর বেড়েছে, কমেছে ১১৪ টির এবং ১৭টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।