মহসিন শিকদার, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডে টানা ১২ বছর একই নিরীক্ষক (অডিটর) দিয়ে আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষা করিয়েছে। অথচ সিকিউরিটিজ আইনে টানা তিন বছরের বেশি একই প্রতিষ্ঠান নিরীক্ষক হিসেবে নিয়োগের বিধান নেই।

নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরিতে অনিয়মের কারণে বেক্সিমকো ফার্মার কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, কোম্পানির ২০১২ থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত যেসব বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, সেখানে এম জে আবেদিন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট নিরীক্ষা করেছে বলে বিএসইসির নজরে এসেছে।

বিএসইসি বলেছে, সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, একটি নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানকে টানা তিন বছরের বেশি সময় নিয়োগ দেওয়ার কোনো অনুমতি নেই। যেটা ২০১১ সালের ২৭ জুলাই বিএসইসির জারি করা নির্দেশনার শর্ত (বি) এবং ২০১৮ সালের ২০ জুন বিএসইসির জারি করা নির্দেশনার শর্ত ২(২) লঙ্ঘন করেছে।
বিএসইসি একই সঙ্গে ব্যাখ্যা চেয়েছে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান এম জে আবেদিন অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাছেও।

তবে বেক্সিমকো ফার্মার দাবি করেছে, অডিটর নিয়োগে বিএসইসির যে প্রজ্ঞাপন রয়েছে, সেটার ওপর উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়। এতে সেই প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেন উচ্চ আদালত। এ জন্য টানা দীর্ঘ সময় একই নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে বাজার-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ১২ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠান দিয়ে বেক্সিমকো ফার্মা নিরীক্ষা কার্যক্রম কেন পরিচালনা করছে, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। বিগত সরকারের আমলে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের বিরুদ্ধ এমন অভিযোগ থাকলেও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারী শিল্পখাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের প্রভাব ও দাপটের কারণে কোন ব্যবস্থাই নিতে পারেনি বিএসইসি।

তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের বিশিষ্ট ব্যাংকার খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বে বর্তমান বিএসইসি শেয়ারবাজারের অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এরমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারের বড় রাঘব-বোয়ালদের শাস্তির জালে আটকও করেছে।