কাট্টলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিআইডিকে ‘নির্দেশ’ বিএসইসির
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি কাট্টলী টেক্সটাইল লিমিটেডের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে সংগ্রহীত তহবিল ‘নয়ছয়’ করার অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন হাতে আসার পর কাট্টলীর বিরুদ্ধে এই নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
জানা যায়, এরইমধ্যে বিএসইসির গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিআইডিকে পাঠানো হয়েছে, যার আলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে তারা। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী উপজেলার এই কাট্টলী টেক্সটাইলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি সিআইডির অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠি পাঠানোর বিষয়টি অবহিত রয়েছেন এমন একজন কর্মকর্তা এ তথ্য দিয়েছেন; তবে গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় তিনি তার পরিচয় প্রকাশ করেননি।
সিআইডিতে পাঠানো চিঠিতে বিএসইসি বলেছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেন্ত কমিশন ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর কাট্টলী টেক্সটাইল লিমিটেডের আইপিও অর্থ ব্যবহারসহ অন্যান্য বিষয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা চলতির বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দেয়।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, কাট্টলী ২০১৮ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে ৩৪ কোটি সংগ্রহ করেছিল। পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও কোম্পানিটি আইপিও তহবিল ব্যবহারে ব্যর্থ হয়। আইপিও তহবিলের মাধ্যমে মূলধনী যন্ত্রপাতি ক্রয়, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার স্থাপন এবং আইপিও খরচ বহন করার জন্য শেয়ারবাজার থেকে ৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল তারা।
২০২০ সালের অক্টোবরের মধ্যে তহবিলটি ব্যবহার করার কথা ছিল কাট্টলীর। কিন্তু ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তারা আইপিও তহবিলের মাত্র ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যবহার করেছে। কোম্পানিটির আইপিও তহবিল ব্যবহারে ব্যর্থতা জানতে ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবর তিন সদস্যের একটি কমিটি তদন্ত গঠন করে বিএসইসি। কমিটিতে ছিলেন বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাসুদ খান।
চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেন্ত কমিশন গত ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখে কাট্টালি টেক্সটাইল লিমিটেডের আইপিও অর্থ ব্যবহারসহ অন্যান্য বিষয় অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কমিশনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
চিঠিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কাট্টালি টেক্সটাইল লিমিটেডের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর সংশ্লিষ্ট ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্ধারিত সংস্থা অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশ পুলিশ বরাবর প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অতএব, এ বিষয়ে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর সংশ্লিষ্ট ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি নির্দেশক্রমে প্রেরণ করা হলো।
কাট্টালি টেক্সটাইল লিমিটেড ২০১৮ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাাজার থেকে ৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। কিন্তু, দীর্ঘ পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও কোম্পানিটি আইপিও তহবিল ব্যবহারে ব্যর্থ হয়। আইপিও তহবিলের মাধ্যমে কোম্পানিটি মূলধনী যন্ত্রপাতি ক্রয়, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার স্থাপন এবং আইপিও খরচ বহন করার জন্য ৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। ২০২০ সালের অক্টোবরের মধ্যে তহবিল ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু, ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানিটি আইপিও তহবিলের মাত্র ১৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যবহার করেছে।
এর আগে আইপিও তহবিল ব্যবহারে ব্যর্থতার জন্য ২০২০ সালের জুলাই মাসে বিএসইসি কাট্টালি টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ১ কোটি টাকা জরিমানা করে এবং স্বতন্ত্র ও মনোনীত পরিচালক ব্যতীত অন্য পরিচালকদের প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। এবার সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে সিআইডিকে দায়িত্ব দিয়েছে বিএসইসি।
উল্লেখ্য, ৩০ জুন ২০২৪ অর্থবছরে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ০.২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ৮৪ পয়সা। আগের বছর শেয়ার প্রতি লোকসান ছিল ৩২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৮৬ পয়সা।