দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমন ও আবাস খাতের কোম্পানি ইউনিক হোটেলের উদ্যোক্তা পরিচালকদের হঠাৎ শেয়ারধারণ বৃদ্ধির রহস্য কী এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনার ঝড়। হঠাৎ শেয়ার ক্রয়ের ঘোষণা ছাড়াই কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কারণ জানেনা কেউ। গত এক মাসের মধ্যে কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ধারণে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে।

তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার ক্রয় বা বিক্রয়ের জন্য পূর্ব ঘোষণা বাধ্যতামূলক করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এর ওয়েবসাইটে এ বিষয়ে কোন ধরনের সংবাদ পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে ডিএসইর কাছেও মিলেনি এর সদুত্তর।

সূত্র মতে, ইউনিক হোটেলের উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়ের ঘোষণা ছাড়াই এক মাসের ব্যবধানে শেয়ার ধারণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৬ শতাংশেরও বেশি। শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ঘোষণা ছাড়াই কিভাবে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ধারণে পরিবর্তন হয় তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। এতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা এটা নিয়ে আতঙ্ক ও উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কেউ কেউ বলছে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করেছে। আবার কেউ কেউ মন্তব্য করছে ঘোষণা ছাড়াই কম দামে শেয়ার ক্রয় করে তা আবার বেশি দামে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৫২ শতাংশের বেশি উদ্যোক্তা পরিচালকদের নিকট রয়েছে।

সূত্র মতে, গত এক মাসের মধ্যে ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানি ইউনিক হোটেলের শেয়ার ধারণে পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের অংশের শেয়ার ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ারের পরিমাণে কমেছে। তবে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ারের পরিমাণ বৃদ্ধির পেছনে কোনো তথ্য নেই দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে। কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের কর্মকান্ডে উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ নভেম্বর,২০২৪ তারিখে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ছিলো ৪৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ। আর ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক ৪৫ শতাংশে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

এছাড়া, ৩০ নভেম্বর,২০২৪ তারিখে কোম্পনিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিলো ২৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ, বিদেশীদের শেয়ার ছিলো ০ দশমিক ২৯ শতংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ছিলো ২৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। আর গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ১৫ শতাংশে, বিদেশীদের শেয়ার দাড়িয়েছে ০ দশমিক ২৫ শতংশে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ১৫ শতাংশে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটিতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কমেছে ০ দশমিক ১৯ শতাংশ, বিদেশীদের শেয়ার কমেছে ০ দশমিক ৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার সবচেয়ে বেশি কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।