টাকা উদ্ধারে আইনি পদক্ষেপ বাংলাদেশ ব্যাংকের
ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকড করে চুরি করা টাকা উদ্ধারে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (৭ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর সচিবলায়ের মহাব্যবস্থাপক ও সহকারী মুখপাত্র এএফএম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট গন্তব্য শনাক্ত করে উদ্ধারের বিষয়ে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ফিলিপাইনের এন্টি-মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করছে।
ইতোমধ্যে ফিলিপাইনের এন্টি-মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষ তাদের দেশের আদালতে মামলা দায়ের করে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলোর ফ্রিজ আদেশ আদালত থেকে সংগ্রহ করেছে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাংকে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজন সাইবার বিশেষজ্ঞ পরামর্শক ও তার ফরেনসিক ইনভেস্টিগেশন টিম এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের টিমের সঙ্গে কাজ করছে।
ফিলিপাইনের এন্টি-মানি লন্ডারিং কর্তৃপক্ষের তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অর্থ আদায় আদালতের আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং প্রয়োজনবোধে বিশ্বব্যাংকের স্টোলেন অ্যাসেটস রিকভারি প্রক্রিয়াও অবলম্বিত হবে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে দেশ ও দেশের বাইরে তদন্তলব্ধ তথ্যাদি অপ্রকাশিত রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বৃহত্তর আর্থিক খাতে সাইবার নিরাপত্তা সার্বিকভাবে নিশ্ছিদ্র করার প্রক্রিয়া জোরালোভাবে সচল রাখা হয়েছে।
নিউইয়র্কে অবস্থিত ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইর্য়কের বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি চীনভিত্তিক হ্যাকার গ্রুপ হ্যাক করে ফিলিপাইন থেকে ৫শ ৯২ কোটি টাকা সরিয়ে নেয়।
হ্যাকার চক্রটি প্রবাসী ফিলিপাইনের রেমিট্যান্স স্থানান্তরকারী সংস্থা ফিলরেমের মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইর্য়কের মাকাতি সিটি শাখায় পাঁচটি আলাদা হিসাবে মোট ১০ কোটি ডলারের (৭৮০ কোটি টাকা) সমপরিমাণ অর্থ সেখানে জমা করে। এরমধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে সরানো ১শ ৮৮ কোটি টাকা রয়েছে। শ্রীলঙ্কার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এসব টাকা স্থানীয় মুদ্রা পেসোয় রূপান্তর করে চীনা বংশোদ্ভূত একজন ফিলিপাইনের ব্যবসায়ীর করপোরেট ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। ওই ব্যবসায়ীর হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর হয় তিনটি স্থানীয় ক্যাসিনোয়। পুরো ঘটনাটি ঘটেছে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে। ফিলিপাইনের আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি দেশটির অর্থ পাচার প্রতিরোধ কাউন্সিল বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।