এফবিসিসিআই-এর_লোগো.svg

দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা : ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এক্সাইজ ডিউটি বা আবগারী শুল্ক নামে বাড়তি করারোপ নিয়ে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এর পক্ষ থেকেও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোনো প্রকার এক্সাইজ ডিউটি বা আবগারি শুল্ক আরোপ না করার আহবান জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অর্থনীতিবিধরাও ব্যাংকের আবগারি শুল্ককে অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন। জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়ায় এ বিষয়ে নড়েচড়ে বসেছে সরকার। সে কারণে চূড়ান্ত বাজেটে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আবগারি শুল্ক পূর্বেরটাই বহাল থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জানা যায়, এতোদিন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১ লাখ টাকা থেকে ১০ টাকা থাকলেই এক্সাইজ ডিউটি বা আবগারি শুল্ক হিসেবে ৫০০ টাকা দিতে হতো। প্রস্তাবিত বাজেটের আগে এই আবগারি শুল্ক ১০০০ টাকায় উন্নীত করা হবে বলে প্রচার হয়েছিল। তার তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে এই আবগারি শুল্ক ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর তা নিয়ে সমালোচনা কম হচ্ছে না।

যেমন: আগামী ১ জুলাই থেকে কারো ব্যাংক একাউন্টে ১ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা থাকলেই তাকে ৮০০ টাকা ট্যাক্স দিতে হবে। অর্থাৎ, আগামীকাল আপনি তিনমাস মেয়াদি ১ লাখ টাকার এফডিআর করলে মেয়াদ শেষে ৪.৫০% হারে মুনাফা পাবেন ১,১২৫ টাকা। উৎস কর হিসাবে এই ১,১২৫ টাকার ১৫% হিসাবে কাটা যাবে ১৬৯ টাকা এবং ট্যাক্স ৮০০ টাকা। অর্থাৎ মোট কাটা যাবে (১৬৯+৮০০) = ৯৬৯ টাকা । তিন মাস পরে অাপনি ফেরত পাবেন, (১০০,০০০ + ১,১২৫ -৯৬৯)= ১,০০১৫৬ টাকা। তিন মাস খাটানোর পর আপনার মোট লাভ ১৫৬ টাকা! কি করবেন এই লাভের টাকা দিয়ে?

অনেকেও এও বলেছেন যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ১ লাখ থেকে ২ লাখ টাকা জমা আছে এরকম ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৯১৪! সরকার আসলে এই দানটাই মারার জন্য আবগারি শুল্ক বৃদ্ধি করেছে।

এদিকে ব্যাংকের আমানতের ওপর ধার্য করা আবগারি শুল্ক কে আইন সঙ্গত নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্ণর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদ। একই সাথে ব্যাংক আমানতে আবগারি শুল্ক বাড়ানো হলে তাতে ব্যাংকের তারল্য কমবে বলেও মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।

এছাড়া ব্যাংক হিসাবের এই আবগারী শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবকে অযৌক্তিক বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ডক্টর সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মানুষ একটু টাকা হলে তা নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকে জমা রাখেন। তাই আবগারি শুল্ক বাড়ানোর কোন যৌক্তিকতা নেই।