momenদেশের উন্নয়নের সঙ্গে পুঁজিবাজারে অবদান বাড়ছে না। এখনো আমাদের অর্থনীতি ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভর। দেশে যত বড় বড় প্রকল্প হচ্ছে সেগুলো ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের টাকা পুঁজিবাজার থেকে নেওয়া উচিত। আমাদের জাতীয় আয়ে পুঁজিবাজারে অবদান অনেক কম। অবদান বাড়ানোর অনেক সুযোগ আছে।

সেই জন্য দেশের বড় বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য পুঁজিবাজারকে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের টাকা যোগান দিতে পুঁজিবাজার প্রস্তুত বলে সম্প্রতি দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান একে আব্দুল মোমেন বলেন। সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন আলমগীর হোসেন ও মহিউদ্দিন ফারুক।

পুঁজিবাজারের বড় শক্তি বিনিয়োগকারীদের আস্থা উল্লেখ করে সিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ২০১০ সালের পর থেকে আর কেলেঙ্কারি হয়নি। বাজার মোটামুটি ভালো আছে। উঠানামা পুঁজিবাজারের ধর্ম। সুতারাং দরপতন হলে যে আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করবেন এটা ঠিক না। পুঁজিবাজারের প্রয়োজনে এখন গভীরতা ও লেনদেন বাড়াতে হবে। আর লেনদেন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরো বেড়ে যাবে।

পুঁজিবাজারে সরকারি শেয়ার বাজারে আনা প্রসঙ্গে আব্দুল মোমেন বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সরকারী কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করানোর জন্য সরকার উদ্যোগ নিলেও ওইসব কোম্পানির কর্মকর্তাদের জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না। পুঁজিবাজারে উন্নয়নে সরকারি কোম্পানিগুলো আসলে পুঁজিবাজারের গভীরতা বাড়বে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান বাজারের সমস্যা হচ্ছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতা। দেশের পুঁজিবাজারের স্বার্থে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের আগে সব রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এছাড়াও বাজারে কোয়ালিটি সম্পন্ন কোম্পানি আনা জরুরি বলেও জানান তিনি।

তিনি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, হায় হুতাশ করে শেয়ার ব্যবসা করলে লাভ করা কঠিন। বুদ্ধি খাটিয়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করলে এখান থেকে লাভবান হওয়া যায়। অন্যথায় সম্ভব নয়।

দেশের উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে একে আব্দুল মোমেন বলেন, পুঁজিবাজারে আসলে কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ে। কিন্তু ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করলে সুদ দেওয়ার যে বাধ্যবাধকতা থাকে, পুঁজিবাজারের ক্ষেত্রে সেটি থাকে না, কিন্তু পুঁজিবাজার থেকে নেওয়া টাকার জন্য বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিলেই হয়।

তিনি আরো বলেন, পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বড় দূর্বলতা হল এটি আকারে ছোট। আমারিকার পুঁজিবাজারে এর আকার জিডিপির ৩ গুন। সে তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার অনেক ছোট। অন্যদিকে পুঁজিবাজারের বড় শক্তি হিসাবে বিশ্বাস বা আস্থাকে উল্লেখ করেন তিনি। যা ২০১০ সালের পুঁজিবাজার ধ্বসে হারিয়ে যায়। তবে ১০ সালের পরবর্তীতে সময়ে পুঁজিবাজারে কোন কেলেঙ্কারী হয়নি। এছাড়া বাজার ভালো যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি জানান, মুনাফা বাড়ানোর জন্য চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। সিএসই প্রথমবারের পরিচালন খরচে ইতিবাচক অবস্থানে গেছে। যা এতোদিন নেতিবাচক ছিল। সর্বশেষ (জুলাই, ১৬-জুন, ১৭) হিসাব বছরে আমরা শেয়ারহোল্ডারদের ৬ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিতে পেরেছি। আলোচ্য বছরে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার প্রতি আয় ইপিএস হয়েছে ৫৫ পয়সা।

তিনি বলেন, আমরা কোম্পানির মুনাফা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। কারণ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের পর সিএসই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। তবে দেরিতে হলেও এখন সেই দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। একই সঙ্গে সিএসইর লেনদেন বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা। সিএসইর আয় বাড়াতে সিএসই টাওয়ার নির্মাণের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি।