হঠাৎ তারেক মবিনের ফোনালাপ ফাঁস!
ফয়েজ মাহমুদ, ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং খালেদা জিয়ার পুত্র লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানের সাথে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরির একটি ফোনালাপ ফাঁসের খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। তারেক ও মবিনের এ ফোনলাপের কারনে হঠাৎ করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন ঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
তাদের ফোনালাপের খবর ইতিমধ্যে ‘ইউটিউব’ মাধ্যমে একটি চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে। তারেক রহমানের হঠাৎ ফোনালাপ নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় বইছে।
ফোনে তারেক রহমান দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি এবং বিএনপি নেতাদের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন করেছেন। সেই সাথে তিনি বিএনপির রাজনৈতিক নানা কৌশল নিয়ে সমালোচনা, নির্দেশনা এবং সরাসরি কথা বলেছেন। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের কান্ড জ্ঞানহীন কর্মকান্ডের কারনে নানা প্রশ্ন তুলছেন তারেক রহমান।
তিনি আরো বলেছেন, ফখরূল কেন নিরবতা পালন করছে। নেতাকর্মীরা মাঠে সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে গিয়ে মামলা হামলার শিকার হচ্ছে। অথচ তিনি নিজেকে আত্মগোপন রাখছেন। তার মানে তিনি নিজেকে বাঁচানোর জন্য সরকারের সাথে কি আঁতাত করছেন?
ফোনালাপের বিভিন্ন কথা-তথ্য বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে এই ফোনালাপ ডিসেম্বর ২৫ তারিখের। ১০ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ঐ ফোনালাপের কিছু বিশেষ অংশ আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকদের জন্য প্রকাশিত হলো।
গোপন সমঝোতা এবং ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য:
যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মিডিয়ায় মন্তব্য করেছিলেন পর্দার আড়ালে বিএনপির সাথে আলাপ করে সমঝোতার চেষ্টা চলছে। তারেক রাহমান সেই মন্তব্যের ব্যাপারে শমসের মবিনকে জিজ্ঞেস করেন, “কারা করেছে এই সমঝোতা?” সমঝোতার বিষয়টি নিয়ে তিনি বিরক্তি এবং বিস্ময় প্রকাশ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলামের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন:
বিএনপির সাধারণ নেতা-কর্মীরা যখন মাঠে থেকে আন্দোলন করছে তখন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেন লুকিয়ে আছেন তা নিয়ে প্রশ্ন করেন তারেক রহমান। মির্জা ফখরুলের এই ভূমিকাতে খালেদা জিয়ার নির্দেশ/সম্মতি থাকতে পারে বলে জবাব দেন শমসের মবিন। পাল্টা প্রশ্নে তারেক বলেন, “এতে কী কোন লাভ হচ্ছে?” মির্জা ফখরুলকে দিয়ে আন্দোলনও হচ্ছে না আর উনি কোন বক্তব্যও দিচ্ছেন না বলে তারেক বিস্ময় প্রকাশ করেন।
লাগাতার আন্দোলনের পক্ষে তারেক:
লাগাতার আন্দোলনের বদলে বিরতি দিয়ে দিয়ে আন্দোলনের ব্যাপারে কারা পরামর্শ দিচ্ছে এই প্রশ্ন করে তারেক লাগাতার আন্দোলনের পক্ষের নিজের মত প্রকাশ করেন। বিরতি দিয়ে দিয়ে আন্দোলন করলে বিএনপি মাঠ পর্যায়ে সক্ষমতা হারাবে বলে আশংকা করেন তিনি। এমনকি বিদেশী কোন প্রতিনিধি আসলেও কঠোর আন্দোলনের ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন তারেক রহমান।
জাতিসংঘের ভূমিকা এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগ:
ফোনালাপের এক পর্যায়ে শমসের মবিন চৌধুরি জাতিসংঘের প্রতিনিধি তারানকো কী পদক্ষেপ নেবেন সেপ্রসঙ্গে জানালে তারেক রহমান আলোচনা এবং আলোচনায় সময় নষ্ট না করার পরামর্শ দেন। তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দাবি মেনে নিতে বাধ্য করে পদত্যাগের বিষয়ে জোরালো অবস্থান নিতে পরামর্শ দেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সময় নষ্ট করলে আওয়ামী লীগ সুযোগ নেবে এবং ক্ষমতা ছাড়তে চাইবে না।
খালেদা জিয়ার জন্য বার্তা:
খালেদা জিয়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি, সংবাদপত্র সম্পাদকসহ যারা নিরেপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে কথা বলছেন তাদের সাথে আলোচনায় বসতে পারেন বলে পরোক্ষ নির্দেশনা দেন তারেক রহমান।
এছাড়া আন্দোলন নিজ গতিতে চলার ব্যাপারে তিনি বারবার পরামর্শ দেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে লাগাতার আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা সব পর্যায়ের নেতার বোঝা উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
গত ৩১ ডিসেম্বর ইউটিউবে প্রকাশ হবার পরে ক্লিপটি সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পরে এবং বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানামুখি প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
http://www.youtube.com/watch?feature=player_embedded&v=wnBEzSkwfnM#t=0