পার্থ মাহিআহসান আমীন, ঢাকা: বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরি সহ বিএনপির কয়েক শীর্ষ নেতা যোগ দিতে পারেন আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠন হতে যাওয়া নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায়।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ওই সরকারে তারা ‘অনির্বাচিত কোটায়’ যোগ দিতে পারেন। তাদের যোগদানের বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে নানা গুঞ্জন চলছে।

ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ-মাহি বি চৌধুরীসহ বিএনপির কয়েক শীর্ষনেতাকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এ তালিকায় গুঞ্জন রয়েছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার।

এছাড়া আন্দালিব রহমান পার্থ-মাহিকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হবে, এমন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারি দল আওয়ামী লীগের দুটি সূত্র এসব তথ্য আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।

সুত্রে জানায়, বিএনপির কয়েক শীর্ষ নেতা আ’লীগের ফাঁদে পা দিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সরকারের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দিচ্ছে।  আওয়ামী লীগ চাচ্ছে, নতুন মন্ত্রিসভায় ‘অনির্বাচিত কোটায়’ বিএনপির প্রথম সারির কয়েক নেতাকে রাখতে। পাশাপাশি নতুন সরকারে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর পর্যায়ের পদে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কয়েক নেতাকে চাচ্ছেও দলটি।

আওয়ামী লীগ মনে করছে, ‘নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় বিএনপির কয়েক নেতাকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পেলে চার দিক থেকে লাভ হবে। এক, দলটিতে ভাঙন ধরানো যাবে, দুই, এতে নতুন সরকারকে জাতীয় সরকার, বা সর্বদলীয় সরকারে রুপ দেয়া যাবে, তিন, বিদেশে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে, চার, সরকার বিরোধী আন্দোলন তেমন জোরালো হবে না।’

আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের তিন নেতা আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকেজ জানান, ‘বিএনপির কয়েক নেতাকে আগামী সরকারের মন্ত্রিসভায় রাখার জোর চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে দলটির কয়েক নেতাকে প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তারা সাড়াও দিয়েছেন।’

শীর্ষ নেতারা জানান, ‘৫ জানুয়ারির ভোটের আগেই নতুন সরকার গঠন নিয়ে পরিকল্পনা, চিন্তা শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, মহাজোটের শরীক দলের নেতারা। আগামী ২৭, ২৮ জানুয়ারি নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন হতে পারে, এমনটিও ভাবছেন তারা।’

সূত্রমতে, ‘দুইদিন আগে মাহি বি চৌধুরির সঙ্গে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের এক মন্ত্রী যোগাযোগ করেন। তাকে প্রস্তাব দেয়া হয় নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য হতে। মাহি তাতে রাজি আছেন বলে সরকারকে জানান।’মাহি আগামী মন্ত্রিসভায় যোগ দিতে পারেন, এমন আলোচনা বিকল্পধারাতেও চলছে বলে জানান দলটির দুই নেতা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, ‘মহাজোটের সরকারের শুরু থেকেই মাহির আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। সরকার বিরোধী কঠোর কর্মসূচি না দিতে তিনি বিকল্পধারার সভাপতিকে বরাবরই চাপ দেন। তিনি অনেকদিন ধরে দলের সরকার বিরোধী কোনো কর্মসূচিতেও অংশ নেননি।’

মাহির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, ‘মহাজোটে না থাকলেও মাহি প্রচণ্ড বিএনপির বিরোধী। তিনি বিএনপির এক সময় সংসদ সদস্য ছিলেন। তার বাবা বদরুদ্দোজা চৌধুরিকে বিএনপি, জামায়াত জোটের আমলে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে যেতে বাধ্য করে বিএনপি।

মাহিকেও তখন দল থেকে পদত্যাগের জন্য বাধ্য করে দলটি। তিনি বিষয়গুলো এখনো ভুলতে পারেননি।’ এ বিষয় মাহির সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মুঠোফোন খোলা পাওয়া যায়নি।