এরশাদ খালেদা বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা: বিএনপি‘র চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সর্বদলীয় সরকারের শরীক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের শপথ না নেয়া পর্যন্ত গৃহবন্দি রাখা হবে।

খালেদা জিয়া তার নিজের বাড়িতে বন্দি অবস্থায় আবার এরশাদ চিকিৎসার নামে সামরিক হাসপাতালে বন্দী জীবনযাপন করছেন।

গনতন্ত্রের জন্য অভিযাত্রা কর্মসূচির জন্য খালেদা তার বাসভবনে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। আর খালেদাকে অবরুদ্ধ রাখার কারণে গৃহবন্দী বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদেরকে অবরুদ্ধ লেখে প্রহসন নির্বাচন দিয়ে সরকার ফের ক্ষমতায় যাচ্ছে।

খালেদা জিয়াকে নির্বাচন পর্যন্ত অবরুদ্ধ রেখে শেখ হাসিনা শপথ নিচ্ছেন বলে এরকম একটি সংবাদ ব্রিটেনের প্রভাবশালী সাময়িকী দি ইকোনমিস্ট শুক্রবার তাদের এক প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে প্রহসনের নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এটাকে মাইনাস ওয়ান (খালেদা জিয়াকে বাদ দেওয়ার পদ্ধতি) হিসেবেও দেখছে পত্রিকাটি।

এতে বলা হয়, ঢাকার কূটনৈতিক এলাকার ৭৯ নম্বর রোডে গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। দলের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলেই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

পত্রিকাটিতে বলা হয়, ঢাকার কূটনৈতিক এলাকার ৭৯ নম্বর রোডের দিকে খেয়াল করলেই বোঝা যাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের চেহারা।  একটি বাড়ির দুই পাশের রাস্তা ৫টি বালু বোঝাই ট্রাক দিয়ে আটকে অবরুদ্ধ, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা আর এক তৃতীয়াংশ যেন আটকে দিয়েছে রাশিয়ান দূতাবাসের উচুঁ দেয়াল।

এখানেই বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। তার নেতা-কমীরা যারাই সেখানে দেখা করার জন্য গিয়েছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, জেলে ঢুকানো হচ্ছে নতুবা সেখান থেকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে।

৫ তারিখের নির্বাচন লোক দেখানো কৌশল উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন হবে একটি লোক দেখানো কৌশল বিশেষ। ৫ তারিখেই নির্বাচন হবে কিন্তু এর ফলাফল বোঝা যাবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে। এতে বলা হয়, প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্র ১৭ দল এ নির্বাচন বয়কট করেছে।

নির্বাচনে বয়কটে যোগ দেবার খেসারত হিসেবে দেশটির সাবেক স্বৈরশাসক ও তৃতীয় বৃহৎ রাজনৈতিক দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে হাসপাতালে আটক করে রেখেছে সরকার। এছাড়া দেশের পরের বৃহৎ রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামকে তাদের গঠনতন্ত্র ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিকতার অভিযোগে নির্বানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রার্থীরা নির্বাচনে বলপ্রয়োগ করতে পারে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ইতিমধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ আসনের প্রার্থী জয় লাভ করে নিয়েছে। ৯২ মিলিয়ন ভোটদাতার মধ্যে ভোট দিচ্ছেনা ৫৮.৩ মিলিয়ন ভোটার।

যারা ভোট দিতে যাবে তাদেরকে সরকারদলীয় প্রার্থীকেই ভোট দিতে হবে। এমনকি বিশাল জনবহুল ঢাকাতে ২০ টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে মাত্র ২টিতে ভোট গ্রহণ হবে। জয় নিশ্চিত জেনেও সরকারপক্ষ ৫ জানুয়ারির নির্বাচনটি করবে।তাদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, বিএনপি ও তাদের জোটের অপর ১৭ টি দল নির্বাচন বর্জন করেছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মহাম্মদ এরশাদকে হাসপাতালে বন্দি রাখার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে এতে। এরপর জামায়াতে ইসলামীর ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সাথে খাপ না খাওয়ায় নিবন্ধন বাতিলের কথাও বলা হয়েছে। মোট ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাওয়ার বিষয়ও উঠে এসেছে। পত্রিকাটির দাবি ৯২ মিলিয়ন ভোটারের ৪৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন ভোটার ভোট দিতে পারবেনা।