সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চিরুনী অভিযান!
মান্না আতোয়ার, ঢাকা: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সারা দেশের জনগণের জানমাল রক্ষার্থে নিরাপত্তা আরো জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে।
এর সাথে সাথে বিএনপি’র আহুত হরতাল, অবরোধসহ সকল ধংসাত্বকমূলক কর্মসূচি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে চিরুনী অভিযানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সেই নির্দেশের কারণে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ইতিমধ্য বিএনপি’র শীর্ষ ও তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তারের জন্য সারা দেশে চিরুনী অভিযান শুরু করে দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে অভিযানের অংশ হিসেবে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বর থেকে বিরোধী দলীয় নেত্রীর উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, লক্ষীপুর-১ আসনের এমপি নাজিমুদ্দিন আহমেদ ও বিএনপি নেতা ফজলুল মিলনকে রাজধানীর বারিধারা থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদের মধ্যে খন্দকার মাহবুবকে ২৯ ও ৩০ ডিসেম্বর সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে হামলার ঘটনায় শাহবাগ থানায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে এবং বাকি দুইজনকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে তা এখনও জানা যায়নি।
এদিকে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। গ্রেপ্তার অভিযানের পাশাপাশি মিন্টু রোডের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়ের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ডিবির প্রধান কার্যালয়ের সামনে পুলিশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার যেসব মামলা হয়েছে সেসব মামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নেমেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।রাজধানী ছাড়াও সারাদেশে চিরুনী অভিযানে একাধিক টিম কাজ করছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চিরুনী অভিযানের কারণে বিএনপি’র তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতারা বাড়ি-ঘর ছেড়ে আত্মগোপনের পথ বেছে নিচ্ছেন। গ্রেফতার হতে তারা ভয় পাচ্ছে না। কিন্তু গ্রেফতার হওয়ার পর অনেক নেতাকর্মীদের খুঁজে পাওয়া যায় না বলে নিরুপায় হয়ে এই পন্থা অবলম্বন করছে বলে বিএনপি’র দলীয় সুত্রে জানা গেছে।
এই চিরুনী অভিযান সম্পর্কে বিএনপি’র ওলামা দলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব ফজলে রাব্বি তোহা আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমরা তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে নেই। আমরা শুধু কৌশল অবলম্বন করেছি। তার কারণ, আন্দোলনকে ঠেকাবার জন্য সরকার চিরুনী অভিযানের নামে বিরোধী দলের উপর দমন নিপীড়ণ চালাচ্ছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাধারণ সম্পাদকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়না। এরপর তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী কেন্দ্রীয় যুবদলের সদস্য গিয়াস উদ্দিন মামুনের সাথে যোগাযোগ করলে ফোনালাপে তিনি আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকার তার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য চিরুনী অভিযানের নামে নাটক করছে।
যাতে বিএনপি আন্দোলন থেকে সরে আসে। সরকার যত কঠোর হবে বিরোধী দলের আন্দোলন আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে। তাই সরকারের উচিত হবে প্রহসনের নির্বাচনের ফলাফল বর্জন করে দশম নির্বাচন দিয়ে জনগণের দাবী মেনে নেয়া। বিরোধী দলের আন্দোলন চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত আ’লীগ পদত্যাগ না করবে।