পদ্মা অয়েল এমডির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে দুদক
আহসান আমীন, ঢাকা: পদ্মা অয়েল এমডির অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে এবার মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা অর্জনের দায়ে পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আবুল খায়েরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে দুদক।
আর এ লক্ষ্যে প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ সাপেক্ষ্যে সম্পদের হিসেব চেয়ে নোটিশ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। বুধবার কমিশনের সেগুন বাগিচার কার্যালয় তার সম্পদের হিসেব চেয়ে নোটিশ জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানায় দুদকের নির্ভরযোগ্য এ তথ্য আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছে।
এদিকে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়ের একের পর এক দুর্নীতি করেপাহাড় সমান টাকার মালিক বনে গেছেন। সবার একটাই প্রশ্ন পদ্মা অয়েল এমডির খুঁটির জোড় কোথায়? এ প্রশ্ন খোদ নানা মহলে। লোক নিয়োগে দুর্নীতির দায়ে দুদকের দায়ের করা তিনটি মামলার পরও বহাল তবিয়তে স্বপদে বহাল রয়েছেন।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জ্বালানি সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হলেও রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তেল বিপণনকারী সংস্থা পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়ের বরং বহাল তবিয়তে। উল্টো তাকে রক্ষা করতেই মন্ত্রণালয়ের একটি মহল এখনো উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানির কয়েকটি পদে লোক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে দুদক গত ১০ জুলাই এমডি আবুল খায়েরসহ ৯১ জনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে। দুদকের সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর উপ পরিচালক মোরশেদুল আলম বাদী হয়ে নগরীর সদরঘাট থানায় এই মামলা তিনটি দায়ের করেন। ১৯৬০ সালের দুর্নীতি দমন আইনের ৫(২) এবং দন্ডবিধির ৪০৯, ১০৯ ধারায় মামলা তিনটি দায়ের করা হয়।
মামলার বাদী মোরশেদ আলম জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে এমডি আবুল খায়েরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় তাদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০০৯ ও ১০ সালে কোনো ধরনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষা ছাড়াই কোম্পানির বিভিন্ন পদে ৮৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এমনকি দুদকের মামলা দায়েরের পরও এমডি নিজ ক্ষমতাবলে কক্সবাজার ডিপোতে কেরানি পদে একজন, সদরঘাট প্রধান অফিসে ড্রাইভারসহ চারজনকে বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেন বলে জানা গেছে। তিনটি মামলায় এমডি আবুল খায়েরকে আসামি করা হলেও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কিংবা জ্বালানি মন্ত্রণালয় দুদকের মামলা নিয়েও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
পদ্মা অয়েলের একটি সূত্র জানিয়েছে, খোদ জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের একটি মহল আবুল খায়েরকে রক্ষার চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ ঘরানার লোক হিসাবে পরিচয় দেওয়া আবুল খায়ের নিজেকে রক্ষার তদবিরে ঘনঘন ঢাকায় যাতায়াত করছেন।
এ ঘটনায় আবুল খায়ের ২৩ জুলাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেও দুদকের রিট আপিল আবেদনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ১৪ আগস্ট তা স্থগিত করে দেন। দুর্নীতির অভিযোগে ইতোপূর্বে ২০১০ সালের ১৩ মে আবুল খায়েরকে পদ্মা অয়েল কোম্পানির এমডি পদ থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছিল মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে আবার এক বছরের মাথায় তিনি স্বপদে ফিরে আসেন। এবার দায়িত্বে ফিরে আবারো নতুন উদ্যমে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল খায়েরের সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।