বি চৌধুরী বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা:  প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হতে বি চৌধুরিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপির কয়েক শীর্ষ নেতাকে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠন হতে যাওয়া নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগদানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের ওই সরকারে তারা ‘অনির্বাচিত কোটায়’ যোগ দিতে পারেন। তাদের যোগদানের বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যে নানা গুঞ্জন চলছে।

এছাড়া ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ-মাহি বি চৌধুরীসহ বিএনপির কয়েক শীর্ষনেতাকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এ তালিকায় গুঞ্জন রয়েছে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার।

এছাড়া মাহিকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হবে, এমন প্রস্তাব দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। সরকারি দল আওয়ামী লীগের দুটি সূত্র এসব তথ্য আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হতে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি, সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরিকে। সরকারি দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আজ বুধবার রাত দশটার দিকে তার কাছে এ ‘বিশেষ বার্তা’ পাঠানো হয়। নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের নেতা ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে প্রস্তাবটি পাঠানো হয় বলে সূত্র জানায়।

আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে বিএনপির সাবেক নেতা বদরুদ্দোজা চৌধুরির রাজধানীর বারিধারার বাড়িতে আজ রাতে বৈঠক হয় ওবায়দুল কাদেরের। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হওয়ার প্রস্তাবে বদরুদ্দোজা ‘হ্যাঁ’, বা ‘না’ মতামত দেননি বলে সূত্র উল্লেখ করে।

সূত্র জানায়, এর আগে বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব মাহি বি চৌধুরিকে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ‘অনির্বাচিত কোটায়’ যোগ দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। তিনি তাতে রাজি আছেন বলে সরকারকে জানান। সব ঠিক থাকলে তিনি নতুন সরকারের প্রতিমন্ত্রী হতে পারেন। উল্লেখ্য, বদরুদ্দোজা চৌধুরি মাহির বাবা।

আওয়ামী লীগের দাবি, গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আগামী সপ্তাহেই নতুন সরকার গঠনের পরিকল্পনা চলছে। ওই সরকার হবে ‘জাতীয় সরকার’, বা ‘সর্বদলীয় সরকারের’ আদলের। ওই সরকারে মহাজোটের বাইরে থাকা কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাকে রাখার চেষ্টা চলছে।

তথ্যমতে, বদরুদ্দোজা চৌধুরি সদ্য শেষ হওয়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফল বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। ৫ জানুয়ারির আগে নির্বাচন বন্ধেরও তিনি দাবি জানান তিনি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোটের ঘোষিত গত ২৯ ডিসেম্বরের ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচিতেও সমর্থন করেন তিনি।

বদরুদ্দোজা চৌধুরির দল বিকল্পধারা ১৮ দলের জোটে নেই। বিকল্পধারা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), কৃষক শ্রমিক জনতা লিগের সমন্বয়ে সম্প্রতি গঠিত হয়েছে ‘এনডিএফ’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোট।

আওয়ামী লীগ মনে করছে, বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত বদরুদ্দোজা চৌধুরির সমর্থন নতুন সরকারে পাওয়া যাবে। বিএনপির আমলে তাকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার ‘অপমান’ হয়তো তিনি ভুলতে পারেননি। তাছাড়া মঙ্গলবার বদরুদ্দোজা চৌধুরি হরতাল বন্ধ করতেও বিএনপির প্রতি দাবি জানান। এনডিএফ রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হরতাল বন্ধের দাবি জানায়।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করে আজ রাতের বৈঠকের সত্যতা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের আজকের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বৈঠক হয়নি। তবে আগামী সরকার হবে জাতীয় ঐক্যমতের। নির্বাচনে অংশ না নেয়া কোনো কোনো দলকে সরকারে কীভাবে রাখা যায়, এ নিয়ে অনেকের সঙ্গে আলোচনা, বৈঠক চলছে।’ বক্তব্য জানতে বদরুদ্দোজা চৌধুরির মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি।