পাকিস্তান বিশেষ প্রতিবেদক, ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি এবার ক্ষুদ্ধ হয়েছেন পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ‘ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স’ (আইএসআই)। খালেদার বক্তব্যে হঠাৎ করে আইএসআই ‘ক্ষুব্ধ’ হওয়ায় বিপাকে পড়ছেন বিএনপি। আইএসআই  খালেদা জিয়ার ‘সাম্প্রতিক দুটি বক্তব্যে নাখোশ’, এমন বার্তাও তার কাছে এসেছে সংস্থাটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে।

সুত্রে জানায়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তানের ‘ভূমিকায়’ খালেদা জিয়ার ‘মর্মাহত’ হওয়া, ১৮ দলের জোট থেকে সময় হলে জামায়াতকে  বের করে দেয়ার বক্তব্যে  চরম ক্ষুদ্ধ হয়েছেন আইএসআই। এ তথ্য নির্ভরযোগ্য সুত্র আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছে। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের বেশি সমর্থন জামায়াতের প্রতি।

ঢাকাস্থ পাকিস্তান হাইকমিশনের দুই কর্মকর্তা বলেন, ‘জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়টি সময় এলে বিবেচনা করা হবে, খালেদার এমন বক্তব্যের পর জামায়াত তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় পাকিস্তানের কাছে। পাকিস্তান বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

ঢাকায় নিয়োজিত পাকিস্তানের হাইকমিশনার শীঘ্রই জামায়াতের পক্ষে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করবেন।’বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোট থেকে জামায়াতকে বের করে দেয়ার বিষয়টি আইএসআই সমর্থন করবে না বলেও উল্লেখ করেন পাকিস্তান হাইকমিশনের ওই দুই কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিশ্চুক বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির তিনি জানান, কাদের মোল্লা এবং জামায়াতকে নিয়ে খালেদার সাম্প্রতিক দুটি বক্তব্যে পাকিস্তান বেজার হয়েছে এটা সত্য। তবে পাকিস্তান বা আইএসআইয়ের সঙ্গে বিএনপির এ মুহূর্তে দুরত্ব তৈরি হলে কূটনৈতিকভাবে দলটিকে অনেক পিছিয়ে পড়তে হবে। পাকিস্তানের মিত্র বিদেশি কয়েকটি রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সমর্থন বিএনপির প্রতি আছে পাকিস্তানের কারণেই।’

তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরো বলেন, ‘কাদের মোল্লার ফাঁসি হওয়ার পর পাকিস্তানের কেন্দ্রিয় সংসদে নিন্দা প্রস্তাব পাশ হলে বাংলাদেশের সরকার কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখায়। পাকিস্তান আশা করেছিল, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের পক্ষে কথা না বললেও চুপ থাকবেন। এতে তিনি মর্মাহত হন বলে বক্তব্য দেন। যা পাকিস্তানকে হতাশ করেছে।’

গত ১২ ডিসেম্বর রাতে জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হয়। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের কেন্দ্রিয় সংসদে আর ১১ ডিসেম্বর দেশটির পাঞ্জাবের প্রাদেশিক পরিষদে তার ফাঁসির বিরুদ্ধে ‘নিন্দা প্রস্তাব’ আনা হয়। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরি নিসার আলি খান ১৪ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করেন।