প্রস্তুতি সম্পন্ন, বঙ্গভবনে শপথের জন্য অপেক্ষা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: নতুন মন্ত্রিসভার সব ধরনের প্রস্তুতির শেষ হয়েছে বঙ্গভবনে। এখন শুধু মন্ত্রীদের শপথ বাক্য পাঠ ছাড়া সব আয়োজন ইতিমধ্যে চুড়ান্ত করা হয়েছে। শপথের মধ্যে দিয়েই তৃতীয়বারের মতো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন।
তবে শপথ কক্ষে ৪৮টি চেয়ারে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের নামে স্টিকার বসানো হয়েছে বলে বঙ্গভবন সূত্র জানিয়েছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৩টায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ পড়াবেন।
নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পর্যায়ক্রমে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরা শপথ নেবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা বলেছেন, মন্ত্রিসভার সদস্যদের দফতর বণ্টন রোববারই হবে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের দায়িত্বও এদিনই বণ্টন করবেন সরকার প্রধান।
নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নিলেই গত নভেম্বরে গঠিত ২৯ সদস্যের নির্বাচনকালীন মন্ত্রিসভার দায়িত্ব শেষ হবে। যারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় উপদেষ্টা ছিলেন, মন্ত্রিসভার শপথের আগেই তাদের অব্যাহতি দেয়া হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী নতুন করে উপদেষ্টা নিয়োগ দেবেন।
এই শপথ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রধান দায়িত্বে থাকা মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, তারা ইতিমধ্যে শপথের প্রস্তুতি শেষ করেছেন। বঙ্গভবনের একজন কর্মকর্তা আজকের বাংলাদেশ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য ও অতিথিদের জন্য দরবার হলে সাজানো হয়েছে আটশর বেশি চেয়ার। সামনের সারির চেয়ারগুলোতে যারা বসবেন তাদের নামের ট্যাগ ইতিমধ্যে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে।
শপথ শেষে অতিথি ও নতুন মন্ত্রীদের জন্য থাকছে চা চক্রের ব্যবস্থা। তার আয়োজন থাকবে পাশের মাঠে। আগের সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও সামনের সারিতে কোনো চেয়ারে তার নাম দেখেননি বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি সেই তালিকা অনুমোদনও করেছেন। মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের শপথের আমন্ত্রণ জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ফোন করা হচ্ছে শনিবার থেকেই। ওই তালিকায় কাদের নাম আছে আর আগের সরকারে থাকা কারা বাদ পড়ছেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। বলা হচ্ছে, মন্ত্রিসভার আকার হবে মাঝারি।
গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মিলিয়ে এবার মন্ত্রিসভার আকার ৫০ জনের মধ্যে সীমিত থাকতে পারে। অবশ্য শনিবার ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “নতুন সরকার যে ধরনের আকৃতি হয় সে ধরনেরই হবে। এবার দু’একজন উপমন্ত্রী থাকবেন।” ২০০৮ সালের নির্বাচনে জিতে প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ওই সরকারে না থাকলেও শেখ হাসিনার ১৯৯৬ সালের সরকারে উপমন্ত্রী ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ক্ষমতার বাইরে থাকা আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফেরে। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করেন হাসিনা।