মনমোহনস্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় বারের মতো শপথ নেওয়ার পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বলেছেন, ভারতের মানুষ যে কোনও পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের পাশে থাকবে।

দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি অমীমাংসিত দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি দ্রুত সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তৃতীয় বাবের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর রবিবার বিকালে সাড়ে ৫ টার দিকে টেলিফোনে শেখ হাসিনাকে একথা বলেছেন মনমোহন সিং।

রিপোর্টে নতুন মন্ত্রিসভা নিয়ে বলা হয়েছে, হাসিনার নতুন মন্ত্রিসভায় প্রায় ১২ বছর পরে ফিরেছেন তাঁর দলের তিন প্রবীণ নেতা। এঁরা হলেন আমির হোসেন আমু (শিল্প), মুহম্মদ নাসিম (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ) ও তোফায়েল আহমেদ (বাণিজ্য)। ২০০৬-এ অভ্যুত্থানকারী সরকারের সুরে সুর মিলিয়ে হাসিনাকে সরিয়ে আওয়ামী লীগের  নেতৃত্বে সংস্কারের দাবি জানানোর কারণেই গত মন্ত্রিসভায় এঁরা জায়গা পাননি।

পরে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের সময়ে তোফায়েল আহমেদকে মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব দিলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। কিন্তু আগের মন্ত্রিসভার যে সব সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পদ ও অকর্মণ্যতার অভিযোগ উঠেছিল, এই মন্ত্রিসভায় তাঁদের বাদ দিয়েছেন হাসিনা। বাংলাদেশের কূটনৈতিক সূত্রের খবর, দীপু মণির বিরুদ্ধে তাঁর সতীর্থরাই ‘বেশি কথা বলা’র অভিযোগ করতেন।

ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হাসিনার উপদেষ্টারাও তাঁদের বিদেশমন্ত্রীর ওপর খুশি ছিলেন না। তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য দীপু মণি কলকাতায় এসে মহাকরণে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তিনি বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। অনেকের বদ্ধমূল ধারণা, এই ঘটনার পর থেকেই তিস্তা চুক্তি ও স্থলসীমা চুক্তি নিয়ে বিরোধিতায় অনড় অবস্থান নেন মমতা।

ফলে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ঢাকা সফরে গিয়ে হাসিনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসার পরেও অতি গুরুত্বপূর্ণ এই দুই চুক্তি বাস্তবায়ন করা যায়নি। মমতার সঙ্গে বাদানুবাদকে দীপু মণির সব চেয়ে বড় ‘কূটনৈতিক হঠকারিতা’ বলে মনে করা হয়, যার খেসারত দিতে হয়েছে দেশ ও সরকারকে। নির্বাচনী অন্তর্র্বতী সরকারেই দীপু মণিকে ছেঁটে দিয়েছিলেন হাসিনা। এ বারও বাদ পড়তে হল তাঁকে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, শপথের সময়ে গোমড়া মুখে বেগম রওশনের পাশে বসে ছিলেন জাতীয় পার্টির নেতা এরশাদ। হাসপাতাল থেকেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। শপথের পরে হাসিনা তাঁর নাম মন্ত্রী পদমর্য়াদার দূত হিসেবে ঘোষণা করার পরে প্রাক্তন এই সেনাশাসকের মুখে হাসি ফোটে। রাষ্ট্রপতির বাসভবন থেকে আর হাসপাতাল নয়, নিজের বাড়িতেই ফেরেন এরশাদ সাহেব। সুত্র: আনন্দবাজার