সেই দুর্নীতিবাজ সচিব পুরস্কৃত!
মান্না আতোয়ার, ঢাকা: স্বপ্নের পদ্মা সেতুর দুর্নীতির সাথে অভিযুক্ত যে সচিব সেই সচিব কয়েক মাস ওএসডি থাকার পর নতুন মন্ত্রীসভা গঠনের ২ দিনের মধ্যেই পুরস্কৃত হয়েছেন।তিনি আর কেউ নন এই দুর্নীতিবাজ হচ্ছেন তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের সচিব মোশারফ হোসেন ভুঁইয়া।তাকে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন এর চেয়ারম্যান করে পুরষ্কৃত করল সরকার।
পদ্মা সেতু দুর্নীতির সাত আভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম হলেন এই মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া। পদ্ধা সেতু দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অপরাধে ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অপরাধে ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে বরখাস্ত করে জেলে পাঠানো হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের ৫ জুন বরখাস্ত আদেশ তুলে নেওয়া হয় এবং জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এই সাতজনের বিরুদ্ধে কানাডা ভিত্তিক কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিনকে অনৈতিক উপায়ে পদ্মা সেতুর কনসালটেন্সির কাজ পাইয়ে দেবার জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
লাভালিনের অফিশিয়াল ডায়রি এর মতে এই কাজের জন্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিশেষ কে ১০-১২% কমিশন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪% মন্ত্রণালয়, ২% কায়সার, ২% নিক্সন, ১% সচিব এবং ১% মসিউর রহমান কমিশন গ্রহণ করেছেন। এবং ডায়রি অনুযায়ী সচিব হলেন মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া।
ওএসডি করার পর ওই বছরের ২৩ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ বদিউজ্জামন ও কমিশনার সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ও নাসির উদ্দিন আহমেদের সাথে দেখা করেন মোশাররফ হোসেন। পরবর্তীতে গণমাধ্যম কর্মীরা কমিশনে আসার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা বলে তিনি এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিভিন্ন সভায় শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ভোট না দেয়ার জন্য জনগণকে আহবান করেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় শেখ হাসিনা নিজেই পদ্মা সেতু দুর্নীতির আরেক সন্দেহভাজন, আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ এর হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান।
পরবর্তীতে নির্বাচনে মুজিবুর রহমান নিক্সন এর কাছে হেরে যান কাজী জাফরুল্লাহ। ঘটনার পর মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অর্থনীতি সম্পর্ক বিভাগের সচিব আবুল কালাম আজাদকে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। আবুল কালাম আজাদ মেসবাহ উদ্দিন এর জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন।
এদিকে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের সদস্য সুরাইয়া বেগমকে বাস্তবায়ন তদারকি ও মূল্যায়ন বিভাগের সচিব হিসাবে বদলি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের চুক্তিমূলক সচিব মোল্লা ওয়াহিদ উদ্দিনের চাকুরী ১৭ জানুয়ারি শেষ হবে এবং ওই দিনই আবুল কালাম আজাদ এই পদে যোগ দিবেন।