ডিভিডেন্ড প্রদানে কারসাজির অভিযোগ!
মোহাম্মদ তারেকুজ্জামান : অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি টেক্সটাইল খাতের কোম্পানি। কোম্পানিটি ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। কোম্পানিটি গত কয়েক বছর আগেও ‘এ’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করতো। তবে সর্বশেষ হিসাববছরে কোম্পানিটি মুনাফায় থাকা সত্বেও শেয়ারহোল্ডারদের ডিভিডেন্ড দেয়নি। পরিণতিতে কোম্পানিটির স্থান হয় ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে। এতে ডিভিডেন্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ তুলেছেন সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ হিসাব বছরে কোম্পানিটির নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। যদিও আলোচ্য সময়ে এর ইপিএস মাত্র ০.৩৮ টাকা হয়েছে। তবে কোম্পানিটির রিজার্ভের পরিমাণ ৯৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ চাইলেই রিজার্ভ থেকে ডিভিডেন্ড দিতে পারতেন। কিন্তু এক্ষেত্রে কোম্পানিটি তা করেনি। এ পরিস্থিতিতে ডিএসই’র ওয়েবসাইটে প্রদত্ত রিজার্ভের পরিমাণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। তাদের মতে, আসলেই কোম্পানির কাছে এ পরিমাণ রিজার্ভ আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা দরকার।
এদিকে দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর), ২০১৬ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০ দশমিক ৩৮ টাকা। অথচ গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ০ দশমিক ৮৬ টাকা। (জুলাই-ডিসেম্বর), ২০১৬ সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ০ দশমিক ৭৬ টাকা। গত বছর একই সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় করেছিল ১.৩৩ টাকা। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬ অর্থবছরে কোম্পানিটির প্রকৃত সম্পদ মূল্য ছিল ১০. ১১ টাকা। আর ৩০ জুন ২০১৬ অর্থবছরে যা ছিল ১০.৮৬ টাকা।
জানা যায়, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ২০১৪ সালে ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। আর ২০১৫ সালে ৬ শতাংশ স্টক ও ৪ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়ায় কোম্পানিটি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে চলে গিয়েছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে ‘নো’ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করায় কোম্পানিটি বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে।
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, ২০১৬ সমাপ্ত হিসাববছরে ডিভিডেন্ড না পেয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মনে হতাশা বিরাজ করছে। একাধিক শেয়ারহোল্ডারদের মনে প্রশ্ন জেগেছে কোম্পানিটির সচ্ছতা নিয়ে।
বিনিয়োগকারী জামাল হোসেন দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণকে বলেন, কোম্পানিটি ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে কম প্রফিট করেছে। অনেক কোম্পানি রয়েছে লোকসানে থেকেও বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে ডিভিডেন্ড দেয়। কিন্তু অলটেক্স প্রফিটে থেকেও গত বছর ডিভিডেন্ড দেয়নি। এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
উল্লেখ্য, ‘জেড’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৫৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানির মোটি ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৬৮ হাজার শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে ৪১.৯৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪.১০ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৫৩.৯৩ শতাংশ।