baraka-potengaআলমগীর হোসেন ও মোবারক হোসেন দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম রব্বানি চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার অংশীদার হতে চায়। আজকে বাংলাদেশ যে উন্নয়নের রোল মডেল, বাংলাদেশ যে রকেট গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আশা করি বাংলাদেশ রকেট গতিতে এগিয়ে যাবে। আমরাও আপনাদের সঙ্গে অংশীদার হতে চাই। বিশ্বের সব ইকোনোমিস্টরা কিন্তু বলেন, বাংলাদেশ ইজ অ্যা টাইগার নাউ।

তিনি বলেন, আমরা প্রায়ই পত্রিকায় দেখি লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমরা এই টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে আর কিছু লাগবে না। আমাদের টাকাতেই আমরা দেশের চেহারা বদলে দিতে পারবো। অনেকেই কেবল বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি দেশের যতো লাভজনক কোম্পানি, তার একটাও বাংলাদেশিদের না। দেশি একটি কোম্পানি লাভজনক হলে তারা আরও অনেক শিল্প গড়ে তোলেন। কিন্তু বিদেশিরা লাভের সব টাকা বিদেশে নিয়ে যায়।

যে কোম্পানি স্থাপনের জন্য আমরা পুঁজিবাজার থেকে টাকা উত্তোলন করতে চাচ্ছি। তা আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্পন্ন করতে চাই। ১৫ মাসের মধ্যেই জাতীয় গ্রিডে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছাতে চাই। এই ২ প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে বারাকা পতেঙ্গা ১৬৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিষ্ঠানে রূপ নেবে।

তিনি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আমাদের সাথে বিনিয়োগ করুন। পাশাপাশি দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশীদার হোন। পরে কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয় ।

এছাড়া পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলন করে ২টি পাওয়ার প্লান্ট স্থাপন করতে চায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড। আর এর জন্য কোম্পানিটি বাজার থেকে ২২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। আজ বুধবার অনুষ্ঠিত আইপিওর রোড শোতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে বাজারে আসবে এই কোম্পানিটি।

এর অংশ হিসেবে রোড শোর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানিটির বিভিন্ন দিক এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হয় কোম্পানির পক্ষ থেকে। রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন মিলনায়তনে এই রোড শো অনুষ্ঠিত হয়।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসই) অনুমতি পেলে প্রথমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করবে। পরে সাধারণ জনগণের কাছে শেয়ার বিক্রি করা হবে। যে দামে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত কোটার শেয়ার বিক্রি শেষ হবে, সে দাম থেকে ১০ টাকা কমে জনসাধারণের কাছে শেয়ার বিক্রি করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। ২২৫ কোটি টাকা সংগ্রহের জন্য যতগুলো শেয়ার বিক্রি করা প্রয়োজন, ততগুলো শেয়ার ইস্যু করবে কোম্পানিটি।

আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ ২ কোম্পানিতে ব্যয় করা হবে। এর মধ্যে কর্ণফুলী পাওয়ারে ৭২ কোটি ৬৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং বারাকা শিকলবাহা পাওয়ারে ব্যয় করা হবে ৭১ কোটি ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

কোম্পানি ২টি নিমার্ণে মোট খরচ হবে ১ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক অর্থায়ন ১ হাজার ৫৭ কোটি টাকা, আইপিও থেকে ১৪৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, প্রেফারেন্স শেয়ার ১৫১ কোটি টাকা এবং অন্যান্য তহবিল থেকে ১৫৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা অর্থায়ন করা হবে।

কোম্পানি ২টিতে বারাকা পতেঙ্গার ৫১ শতাংশ করে শেয়ার রয়েছে। এই অর্থ থেকে কোম্পানিটি ৭৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণও পরিশোধ করবে। কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ৩০০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ৯৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

(জুলাই- ডিসেম্বর,১৭) ৬ মাসে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সা। যা এর আগের বছর একই সময়ে ছিলো ১ টাকা ৯২ পয়সা। আলোচ্য সময়ে কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা এর আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৯ কোটি টাকা।

২০১১ সালে ৭ জুলাই একটি কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে ২০১৪ সালের ২৮ এপ্রিল পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নিবন্ধিত হয়। সেখানে ফার্নেস অয়েল ভিত্তিক ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার প্লান্টে রূপ লাভ করে।

এ সময় কোম্পানির পরিচালক, ঊর্ধ্বতন কর্মকতাসহ ইস্যু ম্যানেজারসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন। কোম্পানিটিকে আইপিওতে আনতে ইস্যু ম্যানেজারের দায়িত্ব নিয়েছে লংকাবাংলা ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। আর রেজিস্টার টু দ্য ইস্যু হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছে ইউনিক্যাপ ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।