Runner-Bhutan-1দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: রানার অটোমোবাইলস লিমিটেডের রপ্তানিবাজার প্রসারিত হচ্ছে। হিমালয়ের দেশ নেপালের পর এবার ভুটানে মোটরসাইকেল রপ্তানি করতে যাচ্ছে কোম্পানিটি। এ উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি ভুটানের রাষ্ট্রায়ত্ব কম্পানি স্টেট ট্রেডিং করপোরেশন অব ভুটান লিমিটেডকে (এসটিসিবিএল) পরিবেশক নিযুক্ত করেছে।

প্রাথমিকভাবে এসটিসিবিএল ভুটানের বাজারে রানার ব্র্যান্ডের ১০০ থেকে ১৫০ সিসির চারটি মডেল সরবরাহ করবে। আগামী মাসেই রপ্তানির প্রথম চালানটি ভুটানের বাজারে প্রবেশ করবে।

এ লক্ষ্যে এসটিসিবিএলের সঙ্গে গত ২৫ সেপ্টেম্বর এসটিসিবিএল-এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। রানার অটোমোবাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মুকেশ শর্মা এবং স্টেট ট্রেডিংকরপোরেশন অব ভুটান লিমিটেডের (এসটিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়েশি সেলডেন এ সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

এ প্রসঙ্গে রানার গ্রুপের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘ভুটানের বাজারে মোটরসাইকেল রপ্তানি রানার গ্রুপের পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্যও অত্যান্ত গৌরবের বিষয়। আমরা দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান স্টেট ট্রেডিং করপোরশেনকে সহযোগি হিসেবে পেয়ে খুবই আনন্দিত।

ভুটানের বাজারে আমরা ভোক্তাদের ভালো মানের পণ্য ও সেবা পৌছে দেওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নিয়ে এগুতে চাই। আশা করি নেপালের মতো ভুটানেও মেড ইন বাংলাদেশ লেখা রানার ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলের অগ্রযাত্রা সফল হবে। এসটিসিবিএল ভুটানে রানারের মোটরসাইকেলের পাশাপাশি সব ধরনের খুচরা যন্ত্রাংশ, বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদান করবে।

স্টেট ট্রেডিং করপোরেশন অব ভুটান লিমিটেডের (এসটিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়েশি সেলডেন বলেন, ‘আমরা রানার অটোমোবাইলসের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে খুবই আনন্দিত। রানার গ্রুপের মানসম্মত পণ্য ভুটানের বাজারে প্রতিযোগিতা করে গ্রাহকের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা শিগগিরই থিম্পুতে একটি বৃহৎবিক্রয়কেন্দ্র খুলবো। পর্যায়ক্রমে আমরা আগামী ৬ মাসের মধ্যে দেশব্যাপী ডিলার নিয়োগ করে রানার মোটরসাইকেল পুরো ভুটান জুড়ে ছড়িয়ে দেবো।’

এ বছরের ২০ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল নেপালে রপ্তানির মাধ্যমে আন্তর্জাতিকবাজারে প্রবেশ শুরু করে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। নেপালের সর্ববৃহৎ মোটরসাইকেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রমন মোটর্স পুরো নেপাল জুড়ে রানারের মোটরাইকেল বিক্রি করছে।

২০০০ সালে মোটরসাইকেল আমদানি করে বাজারজাত শুরু করে রানার। ২০০৭ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় রানার বাংলাদেশে প্রথম মোটরসাইকেলের কম্পোনেন্টস্ তৈরীর মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে মোটরসাইকেল উৎপাদন শুরু করে-যা বুয়েট এবং বিআরটিএ অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে ২০১১ সালে রানার পানচিং, ওয়েল্ডিং, পেইন্টিং, এসেম্বলিং, টেষ্টিং ইত্যাদি মেশিনারীজ স্থাপনের মাধ্যমে মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী হিসাবে সরকারী অনুমোদন লাভ করে। পূর্ণাঙ্গ মোটরসাইকেল কারখানা হিসেবে ২০১২ সালে পুরোদমে উৎপাদন শুরু করে।

দেশে দ্বিতীয় অটোমোবাইলস কোম্পানি হিসেবে পুঁজিবাজারে আসছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। বর্তমানে আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত একমাত্র অটোমোবাইলস কোম্পানি। এ কোম্পানিটি জাপানের হিনো বাস সংযোজন করে থাকে। এ ক্ষেত্রে রানার অটোমোবাইলস হবে প্রথম ও একমাত্র কোম্পানি যেটি যান উৎপাদন করে থাকে।

বুকবিল্ডিং পদ্ধতির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) পুঁজিবাজারে আসছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। কোম্পানিটি বাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করবে। গত ১০ জুলাই কোম্পানিটিকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি বা বিডিংয়ের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

ইতোমধ্যে বিডিংয়ের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া শেষ করেছে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। এতে কাট অফ মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ৭৫ টাকা। পরবর্তীতে আইপিওর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করা হবে। তাদের কাছে শেয়ার বিক্রি করা হবে ৬৭ টাকা দরে।