‘বাংলাদেশ ব্যাংকের পুঁজিবাজারবান্ধব আচরন জরুরী’
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক সহযোগিতা করলেও শেয়ারবাজার বান্ধব আচরন লক্ষ করা যায় না। আমি মনে করে করি বাংলাদেশ ব্যাংকের শেয়ারবাজারবান্ধব আচরন করার অনেক জায়গা রয়ে গেছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ব্যক্তিগত ভাবেও চিঠি দিয়েছিলেন আমাদের এক্সপোজার ক্যালকুলেশন পরিবর্তন করার জন্য।
অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন নন লিস্টেড প্রতিষ্ঠানগুলোকে শেয়ারবাজারের এক্সপোজার থেকে বাদ দেওয়ার জন্য। কিন্তু জানি না কি কারনে বাংলাদেশ ব্যাংক আজও এসকল কিছু বাস্তবায়ন করেনি। ভাল কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারমুখী করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের বন্ধুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রতিষ্ঠানের শুধুমাত্র পেইড আপ ক্যাপিটাল অথবা ইকুইটির উপর নির্ভর না করে, তার বিজনেস ভলিউমের উপর নির্ভর করা উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের শেয়ারবাজার বান্ধব আচরন থাকলে শেয়ারবাজারের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটানো সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সাবেক সভাপতি মো: ছায়েদুর রহমান।
মঙ্গলবার রাজধানীর পুরানা পল্টনের ফারস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট হোটেলে ‘দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নে শেয়ারবাজারের গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে ব্যবসা বাণিজ্যভিত্তিক বিজনেস আওয়ার টুয়েন্টিফোর ডটকম এবং ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)।
বিএমবিএর সাবেক সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে সহজলভ্য হল ব্যাংক ঋণ। এই সহজলভ্য কাজটি না করে, একটি কোম্পানি কেন আইপিও’র মতো দীর্ঘ কঠিন পক্রিয়ায় জড়াবে। আইপিও অনুমোদনে একজন শিল্পপতি বা উদ্যোক্তাকে নানান নিয়ম কানুনের মধ্য দিয়ে যেতে হয় এবং তালিকাভুক্ত হওয়ার পরে আরও নতুন নিয়ম কানুনের সম্মুখীন হতে হয়।
আর ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে শুধু জমি দেখাতে পারলেই হয়। সেই ঋণের ট্যাক্সও মওকুফ পাওয়া যায়। এরকম চলতে থাকলে ভাল কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারমুখী করানো কষ্টকর হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অথবা স্টক এক্সচেঞ্জ একক ভাবে শেয়ারবাজারকে ভাল করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন তিনি। শেয়ারবাজারের উন্নতি করতে হলে, শেয়ারবাজার থেকে পুজি সংগ্রহ করতে হলে বিনিয়োগকারী থেকে সরকারের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণে এবং পাশাপাশি যে সকল প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা আছে সকলকে ইতিবাচক হতে হবে।
অর্থ মন্ত্রনালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং রাজস্ব বোর্ডের সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং ইতিবাচক ভূমিকা থাকলে শেয়ারবাজারকে আমাদের অভীষ্ট লক্ষে নিয়ে যাওয়া সহজ হবে। তাহলে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারকে আমরা দক্ষীণ এশিয়ার ‘মডেল শেয়ারবাজার’ হিসেবে তুলে ধরতে পারব।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম খায়রুল হোসেন। এছাড়া প্রধান বক্তা হিসেবে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী ও প্যানেল আলোচক হিসেবে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি হাসান ঈমাম রুবেল উপস্থিত ছিলেন।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জিটিভি’র প্রধান প্রতিবেদক রাজু আহমেদ। আর অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিজনেস আওয়ার টোয়েন্টিফোর ডটকমের উপদেষ্টা ও ওমেরা অয়েলের সিইও আক্তার হোসেন সান্নামাত।