দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: নকশা ব্যত্যয় করে নির্মিত রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারের অবৈধ ফ্লোরগুলোর মালিক কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাসভির উল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শনিবার (৩০ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টায় বারিধারার নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। ডিবি (উত্তর) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহজাহান সাজু দেশ প্রতিক্ষণকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

আটক তাসভির উল ইসলাম এফ আর টাওয়ারের ভবন পরিচালনা সোসাইটির সভাপতি দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ভবনটির ২০, ২১ ও ২২ তলার মালিক এবং কাশেম ড্রাই সেল কোম্পানির এমডি।

কাশেম ড্রাইসেলস কোম্পানি লিমিডেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী কর্মকর্তা তাসভির উল ইসলাম। এই ফ্লোরেই চলে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির কার্যক্রম। ২০০০ সালের পর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকা কালে তিনি ওই ১৮ তলা ভবনটিকে ২৩ তলায় উন্নীত করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

রাজউক সূত্র জানিয়েছে, ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভবনটির ভূমি মালিক ইঞ্জিনিয়ার ফারুক ও রূপায়ন গ্রুপ যৌথভাবে নকশা অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। তখন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ১৮ তলা ভবন নির্মাণের জন্য নকশা অনুমোদন দেয়। পরে ২০০০ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসার পর ভবনটিকে ২৩ তলা পর্যন্ত বর্ধিত করে নির্মাণ করা হয়।

ডেভেলপার কোম্পানি ভবনটির ২০ ও ২১তম তলাটি জাতীয় পার্টির প্রয়াত সাবেক সংসদ সদস্য মইদুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে। মইদুল ইসলামের কাছ থেকে ফ্লোর দুটি কিনে নেন কাশেম ড্রাইসেলসের (কাশেম ইন্ডাস্ট্রিজ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএনপি নেতা তাসভীর উল ইসলাম। এরপর তিনি নকশা পরিবর্তন করে ছাদের ওপর আরও দুটি ফ্লোর নির্মাণ করেন।

রাজউক সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাসের সঙ্গে তাসভীরের ঘনিষ্ঠতা ছিলো। সেই সুবাদে ১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ২৩ তলা পর্যন্ত নির্মাণ করলেও রাজউক কোনও বাধা দেয়নি।

বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলার জন্য তাসভির উল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। খুদেবার্তা পাঠালেও উত্তর দেননি। তার একজন ব্যক্তিগত সহকারী জানান, তিনি ২০ ও ২১তম ফ্লোরটি কিনে নিয়েছেন। এখানে তার কোম্পানির অফিসও রয়েছে।