দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন কোনো কিছু আসন্ন বাজেটে থাকবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন। তিনি জানান, আসন্ন বাজেটে পুঁজিবাজার উন্নয়নে এনবিআরের কাছে বেশকিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে এমন সিদ্ধান্তই সরকার নেবে বলে এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বাজারকে স্থিতিশীল করার জন্য সরকার খুবই আন্তরিক। তাই বিনিয়োগকারীদের বাজারের প্রতি আস্থা রেখে বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করার আহবান জানিয়েছেন মিনহাজ মান্নান ইমন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের প্রায় ১ কোটি লোক প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে পুঁজিবাজারের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। আর এই পুঁজিবাজারের গতি আরো বাড়ানোর জন্য মেম্বারদের কাছ থেকে আদায়কৃত অগ্রিম কর হার ০.০৫ শতাংশ থেকে ০.০১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।

বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় করার জন্য তাদের ডিভিডেন্ড ইনকাম ২৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত কর অব্যহতি দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া বাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য ২০ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়েছে। এনবিআর ডিএসই’র দাবিগুলোকে যৌক্তিক মনে করে এ ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। তাই আসন্ন বাজেট পুঁজিবাজার বান্ধব হবে বলে মনে করেন মিনহাজ মান্নান ইমন।

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সঙ্গে বৈঠক করে এ সব দাবি করেছেন ডিএসই, সিএসই এবং বিএমবিএ প্রতিনিধিরা।

ডিএসই মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, ডিএসইর নেতৃবৃন্দ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেকে (এনবিআর) আসন্ন বাজেট উপলক্ষ্যে এ প্রস্তাব দিয়েছেন। এসময় এনবিআর চেয়ারম্যান ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মতিন পাটোয়ারিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশনের (ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথক করা) পর সরকার ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে ৫ বছর ডিএসইকে বিশেষ কর ছাড় সুবিধা দেয়। ক্রমহ্রাসমান হারে দেয়া এই কর ছাড়ার কারণে ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ডিএসইকে কোন কর দিতে হয়নি।

এরপর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৬০ শতাংশ, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪০ শতাংশ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০ শতাংশ কর ছাড় পায় ডিএসই। মঙ্গলবার এনবিআর চেয়ারম্যানকে এই তিন অর্থবছরে শতভাগ কর মওকুফ সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করেছে ডিএসই।

পুঁজিবাজারের স্বার্থে আরও কয়েকটি প্রস্তাব করে ডিএসই। সেগুলো হচ্ছে লভ্যাংশ আয়ের করমুক্ত সীমা ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা, স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্যদের কাছ থেকে উৎসে আয়কর হার ০.০৫ শতাংশ থেকে পূর্বের ০.০১৫ শতাংশ নির্ধারন, আইপিওতে ২০ শতাংশ শেয়ার ইস্যু করা কোম্পানিকে ১ বছরের পরিবর্তে ৩ বছর ১০ শতাংশ হারে কর রেয়াত সুবিধা দিতে বলেছে ডিএসই।

বৈঠকে ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মতিন পাটোয়ারিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।