দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বিশ্বের অন্যান্য স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ৯ মার্চ ‘ডিএসই মোবাইল’ নামে একটি অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন চালু করে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। কিন্তু চালুর চার বছর পেরিয়ে গেলেও ডিএসই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে লেনদেনে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ খুব কমই দেখা গেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডিএসই মোবাইল অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করেছেন মাত্র ৫২ হাজার ৮০৬ জন বিনিয়োগকারী। আর লেনদেনের জন্য সার্ভারে লগ ইন করেছেন ১১ হাজার ৭২২ জন।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন বিনিয়োগকারী আসার সংখ্যা কম হওয়া এবং বিদ্যমান বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতার অভাবের কারণে ডিএসই মোবাইল অ্যাপটি কম ব্যবহার হচ্ছে। এদিকে ডিএসই কর্তৃপক্ষ মনে করছে, শুরুর দিকের তুলনায় ডিএসই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।

ডিএসই মোবাইল অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে হয়। এর পর এটি ব্যবহার করার জন্য একজন বিনিয়োগকারীকে ব্রোকারেজ হাউজ থেকে একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড নিতে হয়। তারপর অ্যাপটির মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার আদেশ দিতে পারেন বিনিয়োগকারীরা। আদেশ কার্যকর হলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে তার মুঠোফোনে একটি বার্তা পৌঁছে যায়।

ডিএসই মোবাইল অ্যাপে তিনটি সংস্করণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি ব্রোকার হাউজের জন্য, আর দুটি বিনিয়োগকারীদের জন্য। বিনিয়োগকারীরা যে দুটি সংস্করণ ব্যবহার করছেন, তার মধ্য একটি হলো ডিএসই মোবাইল ভিআইপি। অন্যটি ডিএসই মোবাইল ট্রেডার। ডিএসই মোবাইল ভিআইপি দিয়ে সরাসরি লেনদেন করা যায় না। এটি দিয়ে মোবাইলে পোর্টফোলিও দেখা যায়। আর ডিএসই মোবাইল ট্রেডার দিয়ে বিনিয়োগকারী নিজেই লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন। তবে বাজারদরের চেয়ে বেশি দরে লেনদেনের অফার বা অর্ডার করলে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ তা বাতিল করতে পারে।

ব্রোকার হাউজগুলো অ্যাপটির যে সংস্করণ ব্যবহার করে, তা হলো ডিএসই ইনভেস্টর। এর মাধ্যমে হাউজগুলো ডিলার হিসেবে শেয়ারের সর্বশেষ তথ্য জানতে পারে। পাশাপাশি শেয়ার কেনাবেচার আদেশও দিতে পারে। তবে একটানা ১০ মিনিট অ্যাপটি ব্যবহার না করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ আউট হয়ে যায়।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ৯ মার্চ থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ডিএসই মোবাইল অ্যাপে মোট ৫২ হাজার ৮০৬ জন বিনিয়োগকারী নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে ডিএসই ইনভেস্টর অ্যাপে নিবন্ধন করেছেন ১৭ হাজার ২২৮ জন। ডিএসই মোবাইল ট্রেডারে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা ৩৪ হাজার ৪৮ জন। আর ডিএসই মোবাইল ভিআইপিতে নিবন্ধন করেছেন ১ হাজার ৫৩০ জন।

ডিএসই মোবাইল অ্যাপটি চালু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের ৫ মার্চ পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪৯ হাজার ৩৬৩টি অর্ডার বা লেনদেনের আদেশ করা হয়েছে। এর মধ্যে কার্যকর হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৯৩টি অর্ডার।

এদিকে বৃহস্পতিবার ডিএসইর মোবাইল অ্যাপে মোট অর্ডার পড়েছে ৪০ হাজার ৮৪১টি। এর মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ২৮ হাজার ৩৩টি। ডিএসই মোবাইল ট্রেডার সংস্করণ দিয়ে অর্ডার দেয়া হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৯৯টি, যার মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ২৬ হাজার ৫২৯টি। আর ডিএসই ইনভেস্টর সংস্করণ দিয়ে অর্ডার দেয়া হয়েছে ১ হাজার ৯৪২টি, যার মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে ১ হাজার ৪৯৪টি।