দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী মারা যাওয়ার পর দাফন প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হবে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ইরানে মারা যাওয়া রোগীদের কীভাবে দাফন কার্য সম্পন্ন হয়েছে তার আলোকে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

শুক্রবার (২০ মার্চ) দুপুরে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা এই কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসে মারা যাওয়া রোগীর দাফনের সময় আমাদের প্রটোকল থাকবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা ও ইরানে যেভাবে দাফন করা হয়েছে সেই সব বিবেচনা করে আমাদের দেশের রোগীদের দাফন করা হবে। আমাদের ধর্মীয় দিকটাও বিবেচনায় থাকবে। আমরা দুই একদিনের মাঝে দাফনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো।

এর আগে, আইইডিসিআর এর পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছিলেন, নিজেদের ব্যবস্থাপনায় মৃত ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন করা হবে। মরদেহ আইইডিসিআর কর্তৃপক্ষ নিজেরাই প্যাকেট করে দেবেন এবং পরিবহনের ব্যবস্থাও করবেন। মৃত ব্যক্তির মরদেহ প্যাকেট করার আগে আমরাই ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী গোসল করিয়ে দেব। এরপর কাফনের কাপড় পড়িয়ে প্যাকেট করা হবে। সেই প্যাকেট কোনো অবস্থাতেই কেউ খুলতে পারবে না। প্যাকেট খুলে আত্বীয়-স্বজনের মরদেহের মুখ দেখার সুযোগ নেই।’

ইরানেও মুসলিম ধর্মের বিধান অনুযায়ী করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে মারা যাওয়া রোগীর মরদেহ ভালভাবে মুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)।

অধ্যাপক ডা. নাসিমা জানান, এ নিয়ে মোট ২০ জন আক্রান্ত হয়েছে। এবং এক জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আর ৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মাঝে একজন মহিলা (৩০), পুরুষ (৩০) ও বয়স্ক পুরুষ (৭০)। তিনি আইসিইউতে আছেন। তিনি গুরুতর অসুস্থ। পুরুষ একজন ইউরোপ দেশ ভ্রমণ করেছেন। বয়স্ক একজন প্রবাসী থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। আর নারী যিনি উনিও কন্টাক্ট করেছেন।

তিনি বলেন, যারা বিদেশ থেকে আসছেন অবশ্যই ১৪ দিন ঘরে অবস্থান করবেন। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কন্টাক্ট করবেন না। খাবারটাও ঘরে বসে খাবেন। তাদের ব্যবহার করা জিনিস আলাদাভাবে পরিষ্কার করতে হবে। একইসঙ্গে এসব জিনিস অন্য কেউ ব্যবহার করবেন না। এরপরেও এসব পরামর্শ না মানলে সরকার আরো কঠোর হবে। ইতোমধ্যে জরিমানা করা হচ্ছে সারাদেশে।

নাসিমা সুলতানা বলেন, পোস্টার ও লিফলেট দিয়ে আমরা প্রচার করছি। তারপরও বলছি একটি টিস্যু পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না। হাঁচি-কাশির পর সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। সামন্য জ্বর বোধ করলেও ঘরে থাকবেন। জরুরি প্রয়োজন হলে মাস্ক পরে যাবেন।

তিনি বলেন, লকডাউন মানে সবাই বাড়িতে থাকবেন। অতি প্রয়োজনীয় ছাড়া অর্থাৎ দোকান, ওষুধের দোকান ছাড়া সব কিছু বাসায় থাকবেন। ওই এলাকার কেউ ভেতর থেকে বাইরে যেতে পারবেন না। বাইরে থেকে ভেতরে যেতে পারবেন না।