দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: দেশের পুঁজিবাজারের গতি এখন কিছুটা স্লথ হয়েছে। সূচক ও লেনদেন কমেছে। কিন্তু এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এমন কিছু হয়ে যায়নি বা এমন কোনো সিদ্ধান্ত সরকার তরফে আসেনি যে, বাজারে তার প্রভাব ফেলবে। বরং সরকার, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিও ইতিবাচক ধারায় পথ চলছে।

এই মুহূর্তে বুঝে শুনে বিনিয়োগে কোনো আশঙ্কা দেখছি না। এটি সাময়িক সময়ের জন্য। খুব শিগগির এই পরিস্থিতি থেকে বাজার বেরিয়ে আসবে, এটি আমার বিশ্বাস। সরকার প্রধানও পুঁজিবাজার নিয়ে বরাবরই তার ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। বলতে দ্বিধা নেই বর্তমান সরকার বিনিয়োগবান্ধব। বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আপনারা বিনিয়োগ করেন, দেশে বিনিয়োগে যদি কোনো সমস্যা থাকে আমাকে বলেন। আমি সমস্যাগুলো সমাধানের করব।’ সরকার প্রধান হিসেবে তিনি অনেক বড় একটি আস্থার কথা বলেছেন। তাতে আমরা বুঝতে পারছি যে, সরকারও কিন্তু আন্তরিক। বাংলাদেশ ব্যাংকও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইতিবাচক। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও ইতিবাচক ধারাতেই আছে।

পুঁজিবাজার আরও অনেক দূর যাবে। এই বাজারের সম্ভাবনাও অপার। কারণও আছে। অতীতের চেয়ে ভালো মানের লাভজনক প্রতিষ্ঠান বাজারের আছে। যারা নিয়মিত বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিচ্ছেন। করোনা মহামারির মধ্যে কিছুটা অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি হলেও পুঁজিবাজার এই মন্দাভাবে বেশিদিন ছিল না।

বরং অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হিসেবে দেশের সামায়িক বিনিয়োগে বড় ভূমিকা রাখছে পুঁজিবাজার। এখন পুঁজিবাজারে সূচক কমে যাওয়া কিংবা লেনদেন কমার পেছনে যে কিছু দৃশ্যমান কারণ আছে।

সেগুলো হচ্ছে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যারা হাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাজারে এসেছিলেন, তাদের পুঁজি খানিকটা আটকে গেছে। ফলে লেনদেন খুব একটা হচ্ছে না। কারণ যেটা কমে গেছে সেটা বিক্রি করে অন্য শেয়ারে বিনিয়োগেরও সুযোগ নেই। তাই লেনদেনও কম হচ্ছে। লেনদেন কমার এটি একটি কারণ।

দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে, আমাদের অনেকগুলো বন্ড সাবস্ক্রাইব হয়েছে। এই বন্ডে অনেকগুলো টাকা ঢুকেছে। এটি বাজার থেকেই গেছে। সেটির একটা প্রভাব আছে পুঁজিবাজারে। তৃতীয়ত, যারা মার্জিন লোনে কাজ করে সেখানেও জায়গাটা কমে গেছে। এই তিনটি কারণে পুঁজিবাজারের গতি কিছুটা স্লথ হয়েছে। তবে এই বৃত্তে খুব বেশিদিন বাজার আটকে থাকবে না।

খুব কম সময়ের মধ্যেই বাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরবে। আবারও সূচক বাড়বে। লেনদেন বাড়বে। এখন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সাময়িক যে ভাবনা রেখাপাত করেছে তা মুছে যাবে। অতীতেও বলেছি, এখনো বলছি, আতঙ্কিত না হয়ে দেখেশুনে, বুঝে বিনিয়োগ করতে হবে।

সব ধরনের তথ্যই উন্মুক্ত রয়েছে। বিনিয়োগের আগে কেবল তা জেনে নিতে হবে, দেখে নিতে হবে। তাহলে বাজার সংশোধন হলেও ভয়ের কিছু থাকবে না। লেখক: সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।