দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মার্জিন ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে শর্ত শিথিল করেছে। এতদিন তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন হলে ৩০ কার্যদিবস পর্যন্ত মার্জিন ঋণ সুবিধা পাওয়া যেতো না। এখন থেকে ক্যাটাগরি পরিবর্তন হলেও শর্ত সাপেক্ষে মার্জিন ঋণের সুবিধা পাওয়া যাবে। বিএসইসি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

উল্লেখ্য, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়ম অনুযায়ী তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন হলে পরবর্তী ৩০ কার্যদিবস সেই কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগকারীরা মার্জিন ঋণের সুবিধা পাবেন না। এই শর্ত সব ক্যাটাগরির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ছিল। ২০১৫ সালের ২৭ অক্টোবর এমন আইন জারি করেছিল বিএসইসি।

জানা যায়, তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানির ক্যাটাগরির উন্নতি হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের জন্য এখন থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যেও মার্জিন ঋণ সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। এক্ষেত্রে পূর্বের নিয়ম ছিল- উন্নতি বা অবনতি যাই হোক না কেন, কোন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ঋণের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিধিনিষেধ ছিল।

এখন থেকে কোন কোম্পানির ক্যাটাগরির অবনতি হলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মার্জিন ঋণ সুবিধা পাবে না। আর যদি অবনতি হয়ে জেড ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর হয়, সেক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ পাবেন না বিনিয়োগকারীরা। তবে যদি কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তনে উন্নতি হয়, তাহলে মার্জিন ঋণ সুবিধা অব্যাহত থাকবে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো সাধারণত চার ক্যাটাগরিতে লেনদেন হয়। ক্যাটাগরিগুলো হলো- এ, বি, এন এবং জেড। নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জেড বা এন ক্যাটাগরি থেকে কোন কোম্পানি ‘বি’ বা ‘এ’ ক্যাটাগরিতে, ‘বি’ এবং ‘এন’ ক্যাটাগরির কোন কোম্পানি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হলে ওই কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগকারীরা ৩০ দিনের মধ্যেই মার্জিন ঋণ নিতে পারবেন। তবে ক্যাটাগরির অবনতি হলে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না। আর ‘জেড’ এবং ‘এন’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর শেয়ার ক্রয়ের জন্য কোনভাবেই মার্জিন ঋণ পাবে না বিনিয়োগকারীরা।

ক্যাটাগরি নির্ধারণ হয় যেভাবে: পুঁজিবাজারে কোন কোম্পানি নতুন তালিকাভুক্ত হলে প্রথম এক বছর ‘এন’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করে। পরে সাধারণত সেই কোম্পানির ডিভিডেন্ড প্রদানের ওপর ভিত্তি করে ভিন্ন ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়।

তালিকাভুক্তির পর কোন কোম্পানি যদি প্রথম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ বা তার বেশি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে তবে সেই প্রতিষ্ঠানকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর করা হয়।

বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশের কম ডিভিডেন্ড দিলে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত হয়। আর তালিকাভুক্ত কোন কোম্পানি যদি বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড দিতে ব্যর্থ হয়, তবে ওই কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে লেনদেনের জন্য স্থানান্তর করা হয়।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ২৬৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়। অর্থাৎ এই কোম্পানিগুলো বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ বা তার বেশি ডিভিডেন্ড দিয়েছে। আর ১০ শতাংশের কম ডিভিডেন্ড দেয়া ৭১টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয় ‘বি’ ক্যাটাগরিতে। এছাড়াও বিনিয়োগকারীদের কোন ডিভিডেন্ড দিতে পারেনি এমন ৩৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে। আর শেয়ারবাজারে নতুন তালিকাভুক্ত বা ‘এন’ ক্যাটাগরিতে শেয়ার লেনদেন হচ্ছে এমন কোম্পানির সংখ্যা ১২টি।