জুট স্পিনার্স দেউলিয়ার পথে, নিরীক্ষকের বিরল মন্তব্য
দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ও ব্যবসায় অস্তনিমিত জুট স্পিনার্সের উৎপাদন ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে বন্ধ রয়েছ। যে কোম্পানির সম্পদ এখন ঋণাত্মক। যার মিরাকল কিছু ছাড়া পূণ:উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা একেবারেই নেই। তারপরেও কোম্পানির শেয়ার দর ১০০ টাকার উপর। যেটাকে অস্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক। কোন কোম্পানির শেয়ার দর নিয়ে নিরীক্ষকের এমন মন্তব্য বিরল ঘটনা।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ২০২০-২১ অর্থবছরের শেষ দিনে জুট স্পিনার্সের লেনদেন হয়েছে ১২১.৯০ টাকায়। যা কোম্পানির অবস্থা বিবেচনায় অস্বাভাবিক। যে কোম্পানির শেয়ার দর এই অস্বাভাবিক হওয়ার মতো কোন মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই।
কোম্পানি কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে অগ্রিম হিসাবে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ও গ্রাহকের কাছে পাওনা হিসাবে ৩ লাখ টাকা দেখিয়েছে আসছে। কিন্তু কোন ধরনের সমন্বয় করছে না। ওই হিসাবের সত্যতার বা আদায়ের সম্ভাব্যতার বিপরীতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ নিরীক্ষককে কোন প্রমাণাদিও দিচ্ছে না। যেখানে লোকসান নিশ্চিত হলেও কোন ধরনের সঞ্চিতি গঠন করা হচ্ছে না।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে পণ্য ক্রয়বাবদ ৭ কোটি ২ লাখ টাকার ও বিক্রির আগেই অগ্রিম হিসাবে ৭৫ হাজার টাকার দায় রয়েছে। কিন্তু এই হিসাবও সমন্বয় করা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। এক্ষেত্রেও সত্যতা নিয়ে কোন প্রমাণাদি নিরীক্ষককে দেয়নি জুট স্পিনার্স কর্তৃপক্ষ।
জুট স্পিনার্স কর্তৃপক্ষ ৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকার সুদজনিত ব্যয়ের মধ্যে ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকার সঞ্চিতি বছরের পর বছর ধরে দেখিয়েছে আসছে। তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ওই সুদের বিপরীতে দায়েরকৃত জনতা ব্যাংকের মামলার আপডেট তথ্য নিরীক্ষককে সরবরাহ করেনি। এ কোম্পানিটিতে শ্রম আইন অনুযায়ি গঠিত ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ফান্ড রয়েছে। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তা বিতরন করেনি। যা শ্রম আইনের ব্যত্যয়।
এদিকে সম্প্রতি জুট স্পিনার্সকে একটি কৌশলগত কর্ম পরিকল্পনা জমা দিতে বলা হয়েছে। সেখানে কোম্পানিটি পুনরায় উৎপাদন শুরু করবে সে বিষয়ে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। কোম্পানিটির আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, জুট স্পিনার্স ১৯৮৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এরপর থেকে কোম্পানিটি এখন পর্যন্ত কোনো লভ্যাংশ প্রদান করেনি।
সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরেও কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদান করেনি। সেই সঙ্গে গত চার বছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কোম্পানিটি বড় লোকসানে রয়েছে।