দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে টানা দরপতনে অস্থির হয়ে পড়ছে বিনিয়োগকারীরা। বাজারের কি হবে। কবে নাগাদ বাজার ঘুরে দাঁড়াবো। এমন হাজারো প্রশ্ন এখন বিনিয়োগকারীদের মাঝে। সোমবার প্রায় ২০ জন বিনিয়োগকারী দৈনিক দেশ প্রতিক্ষণে ফোন করে বাজারের ভবিষ্যত জানতে চান। ফলে বাজারের ভবিষ্যত কোন দিকে এ নিয়ে দেশ প্রতিক্ষণের অনুসন্ধানী টিম বাজার বিশ্লেষক ও পুঁজিবাজার নীতি নির্ধারকদের সাথে কথা বলেন।

মুলত রুশ হামলার দিন থেকে শুরু হয় ধস। সেদিন সূচক পড়ে ১০৯ পয়েন্ট। সারা বিশ্বেই সূচক পড়েছিল, তবে পরদিন ঘুরে দাঁড়ায় বেশির ভাগ পুঁজিবাজার। তবে উল্টো ছিল দেশের পুঁজিবাজার। হামলার পরের কর্মদিবস ২৭ ফেব্রুয়ারি পতন হয় আরও বেশি, সূচক পড়ে ১৬৩ পয়েন্ট।

হামলার অষ্টম দিনে আরও বেশি পতনে বিনিয়োগকারীদের মনের ভয় আরও বড় হয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর কেবল আট কর্মদিবসে পুঁজিবাজারে প্রায় ৪০০ পয়েন্ট সূচক পতন হয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বড় পতন দেখলেন সোমবার। এদিক ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স থেকে হারিয়ে গেছে ১৮২ পয়েন্ট।

বর্তমান কমিশনের আমলে দ্বিতীয় দফায় পুঁজিবাজারে এমন ধস দেখা দিয়েছে। ২০২০ সালের মার্চে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর এই ধরনের ধসের মধ্যে লেনদেন বন্ধ করে দেয়ার পর দায়িত্ব নেয় শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে বিএসইসি। মে থেকে টানা উত্থান চলে পরের বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর জানুয়ারি থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত দর সংশোধনের মধ্যে এপ্রিলের শুরুতে ধস দেখা দেয় লকডাউন আতঙ্কে।

যদিও বিএসইসি জানিয়েছিল, লকডাউনে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হবে না, তার পরও বিনিয়োগকারীরা হাতে থাকা শেয়ার কম দামে বিক্রি করে দেন। তবে লকডাউনে লেনদেনে বাজারে দেখা দেয় ব্যাপক চাঙাভাব আর তখন এর আগে যে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেছেন, তারা আফসোস করেন।

এ বিষয় মুঠোফোনে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী-রুবাইয়াত-উল ইসলাম বলেন, ‘সবার প্রতি আমার অনুরোধ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের তেমন সম্পর্ক নেই। অযথা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করবেন না। গত কয়েক দিনে আমরা বিএসইসির পক্ষ থেকে বাজার মনিটর করে দেখেছি, বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করছেন না। ছোট বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন; আর সেই বিক্রির চাপেই বাজারে প্রভাব পড়েছে।’

সোমবার ১৮২ পয়েন্ট সূচক পতনের পর এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘মুলত বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করছেন। বাজার খুব দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবো। এর আগে কয়েকবার দেখছি বাজার পড়ে গেলে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করতে থাকেন। সুতারাং আপনারা ধৈর্য্যধারন করুন। বাজার তার নিজস্ব গতিতে ঘুরে দাঁড়াবো।