দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ শাখার সঞ্চয়পত্র তহবিলের ১৮ লাখ ২ হাজার ২৭০ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ নাজমুল হুদা এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৩ এপ্রিল চার্জশিটটি (নম্বর-৩) আদালতে দাখিল করা হয়। উপপরিচালক রফিকুজ্জামান এটি দাখিল করেন। দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক নাজমুস সায়াদাত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চার্জশিট (অভিযোগপত্র) রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে এবি ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় রেমিট্যান্স বিভাগে (সঞ্চয়পত্র) তিনি কর্মরত ছিলেন। তার সময়কালে তিনি কুপন প্রদান হিসাবের বিপরীতে গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করেছেন, যা অ্যাকাউন্ট রিসিভেবলস সঞ্চয়পত্রের জিএল হেডে নিয়মিত পোস্ট করা হতো। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে সঠিকভাবে এবং যথাসময়ে গ্রাহকদের প্রদান করা অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি করেননি।

অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি গোপন করার জন্য তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সঞ্চয়পত্রের দাবি বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠাননি। ২০১৮ সালের ৩০ মে থেকে ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি সময়ে রেমিট্যান্স অফিসার থাকাকালে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে তিনি ১৮ লাখ ২ হাজার ২৭০ টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন। এই নকল ভাউচারগুলোতে তিনি একই কুপন নম্বর পুনরায় ব্যবহার করেছিলেন, যা প্রকৃতপক্ষে তিনি আগে বিভিন্ন গ্রাহকদের দিয়েছিলেন। তিনি সেই নকল ভাউচারগুলোর পেছনে প্রকৃত গ্রাহকদের স্বাক্ষর জাল করতেন এবং সেগুলো নিজেই যাচাই করতেন।

সঞ্চয়পত্রের জিএল হেডের সঙ্গে সমন্বয় করা প্রকৃত বকেয়ার যে পার্থক্য সেটি আড়াল করার জন্য তিনি নিয়মিত বকেয়া সঞ্চয়পত্রের মাসিক প্রুফ শিট তৈরি করতেন না। তিনি সঞ্চয়পত্রের সব এনক্যাশড কুপনের ফটোকপি সংরক্ষণ করেননি। সঞ্চয়পত্র রেজিস্টারও সঠিকভাবে রক্ষণ করেননি।

সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য, ব্যাংকের গঠন করা তদন্ত কমিটির রিপোর্টসহ ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে, আত্মসাতের সঙ্গে মোহাম্মদ নাজমুল হুদা একাই জড়িত। তবে, তার তৈরি ৪৭টি ভুয়া ভাউচারে দ্বিতীয় অনুমোদিত স্বাক্ষর হিসেবে ব্যাংকের এভিপি গোলাম রব্বানী ভূঁইয়ার স্বাক্ষর রয়েছে। বাকি তিনটিতে ব্যাংকের ভিপি হামিদ উল্লাহর।

সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় চার্জশিটটি (নম্বর-৩) দাখিল করা হয়েছে।