দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) বিদেশি বিনিয়োগ অবস্থান করছে গত সাত বছরের মধ্যে সর্বনিন্ম অবস্থানে। সাত বছরের মধ্যে ডিএসইতে বিদেশি বিনিয়োগ বাজার মূলধনের সর্বোচ্চ ৬.৮ শতাংশ থেকে কমে সর্বনিন্ম ৩.৯ শতাংশে অবস্থান করছে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্সের মাসিক পর্যালোচনায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, চলতি বছরের জুনের শেষে ডিএসইতে বিদেশী যে পরিমাণ বিনিয়োগ এসে নেমেছে, তা ২০১৫ সালের পর থেকে সর্বনিন্ম। ২০১৯ সালে বাজার মূলধন হিসেবে বিদেশির বিনিয়োগ সর্বোচ্চ ছিলো। বুধবার ডিএসই মার্কেট মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ০৮ হাজার ১০৯ কোটি টাকা।

প্রতিষ্ঠানটির পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিদেশী মালিকানাসহ সমস্ত তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকে। প্রতিষ্ঠানটিতে সর্বোচ্চ ৩৬.১০ শতাংশ বিদেশী শেয়ার রয়েছে। তারপরে বেক্সিমকো ফার্মার ২৮.৬ শতাংশ। অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজে ২৫.৭ শতাংশ বিদেশী মালিকানা নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

এছাড়াও, রেনাটা লিমিটেডে ২২.৯ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকে ২০.৬ শতাংশ, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনে (ডিবিএইচ) ১৯.৩ শতাংশ, বিএসআরএম লিমিটেডে ১৭.৫ শতাংশ, স্কয়ার ফার্মায় ১৩.৯ শতাংশ, রিং শাইন টেক্সটাইলে ১০.২ শতাংশ এবং শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজে ৯.৪ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক স্টক ব্রোকার বলেছেন, বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাবের ফলে স্থানীয় এবং বিদেশী বিনিয়োগকারীদের একইভাবে শেয়ার বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব ছিল, যা বাজারকে প্রাণবন্ত করার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বেশির ভাগই সুশাসনের অভাবে ভুগছে। এসব কোম্পানির স্পন্সর ডিরেক্টররা প্রায়ই সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে বেনামে শেয়ার লেনদেন করছে।

তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলোর পর্ষদ মিথ্যা আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে। যে কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আস্থা হারাচ্ছে। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হলে এবং তাদের ধরে রাখতে হলে শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানিকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। আর ভালো কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আনতে হলে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া সহজ করতে হবে।