দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের বড় উত্তান হলেও লেনদেন কিছুটা কমেছে। তবে সূচকের টানা উত্থানের ফলে বিবিনয়োগকারীরা কিছুটা প্রফিট টেকিং কারণে রেণদেন কমেছে। তবে বাজারের সার্বিক চিত্র সন্তোষজনক ও স্থিতিশীল। এদিন ডিএসই পাঁচ খাতের শেয়ারের একচেটিয়া প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

বিশেষ করে বিবিধ খাত, বস্ত্র-ওষুধ ও রসায়ন-প্রকৌশলী এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের প্রভাব ছিল। অন্যদিকে ব্যাংক-বীমা এবং আর্থিক খাতের শেয়ারের মুল্য সংশোধন হয়েছে। তবে টাকার পরিমাণে লেনদেন কিছুটা কমলেও ১৯ শত কোটির ঘরে হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৫১ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বেড়েছে ১৫০ পয়েন্ট।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দামি কোম্পানি রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভার কেয়ার, ম্যারিকো, ইন্টার্ন লুব্রিকেন্টসের শেয়ারের পাশাপাশি বড় মূলধনি কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড, গ্রামীণফোন, বেক্সিমকো ফার্মা, ইউনাইটেড পাওয়ার, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, কোহিনূর কেমিক্যাল, জেএমআইসহ বেশ কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর তাতে পুঁজিবাজারে বড় উত্থান হয়েছে।

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫১.৩৯ পয়েন্ট বা ০.৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৫০৮.৬০ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ১০.৫১ পয়ন্ট বা ০.৭৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২২.৫৯ পয়েন্ট বা ০.৯৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪০৯.১৮ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৩০৫.৬৫ পয়েন্টে। ডিএসইতে আজ টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৮৮৯ কোটি ৫২ লাখ টাকার। যা আগের কার্যদিবস থেকে ১১৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা কম। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকার।

ডিএসইতে আজ ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭২টির বা ৪৫.১৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। দর কমেছে ১৩১টির বা ৩৪.৩৮ শতাংশের এবং ৭৮টির বা ২০.৪৭ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই এদিন ১৫০.২৬ পয়েন্ট বা ০.৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ১৫৫.২০ পয়েন্টে। এদিন সিএসইতে হাত বদল হওয়া ৩১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ১৫০টির, কমেছে ১০৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৫টির দর। আজ সিএসইতে ৬৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘সার্বিকভাবে বাজার ভালো। এর কারণ বিভিন্ন দিক থেকে বিনিয়োগ হচ্ছে, বাজার ভালো রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে সব পক্ষ থেকেই। এছাড়া যেসব সেক্টরে বেশি গেইন হচ্ছে সেসব সেক্টরেই বিনিয়োগ বেশি হচ্ছে। ব্যাংকের দিকে আগ্রহ কম। কারণ, ব্যাংক নিয়ে মানুষের ধারণা নেতিবাচক। তবে ট্রানজেকশন দুই হাজার পার হতে থাকলে সব খাতেই আগ্রহ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

বাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহম্মেদ বলেন, টানা দরপতনের ফলে বাজার বেশ কিছুদিন উত্থানের ফলে বিনিয়োগকারীদের মাঝে আস্থা বাড়ায় বিনিয়োগকারীরা বাজারমুখী হয়ে লেনদেন বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাজারের সার্বিক পরিস্থিতি ইতিবাচক। বাজারের এ গতি চলমান থাকলে লেনদেন সামনে আরো বাড়বে।