দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি নিজেরা নিজেদের দলের গঠনতন্ত্র মানে না, নিয়ম মানে না, আইন মানে না। সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না। যারা দুই বড় দল বলেন, তারা ভুল করেন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন।’ আজ শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘এখানে একটা কথা বলতে চাই, ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপি ৩০০ সিটের মধ্যে পেয়েছিল ৩০ সিট। আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছিল। বিএনপির ছিল ২০ দলীয় জোট। বিএনপির নেতৃত্বে পেল ৩০ সিট, আর বাকিগুলো আওয়ামী লীগ। তাহলে দুই দল একপর্যায়ের হয় কীভাবে? বিএনপির আমলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা, দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন… ওরা মানুষকে কিছু দেয়নি, লুটপাট করে বিদেশে নিয়ে গেছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমন একটা রাজনৈতিক দল, তারা নিজেদের গঠনতন্ত্র মানে না। বিএনপির গঠনতন্ত্রে আছে, সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারবে না। খালেদা জিয়া ও তার ছেলে দুজনই সাজাপ্রাপ্ত আসামি। আর ছেলেকে বানিয়েছে… যে আবার ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, তারা সে দলের নেতা। নিজেরা নিজেদের দলের গঠনতন্ত্র মানে না, নিয়ম মানে না, আইন মানে না। সেই দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা চলে না। যারা দুই বড় দল বলেন, তারা ভুল করেন। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষের সংগঠন।’

গোপালগঞ্জবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ওয়াদা করেছিলাম, সব ঘর আলোকিত করব। আজ বাংলাদেশের সব জায়গায়, সব ঘরে আমরা বিদ্যুৎ দিতে পেরেছি। এখন বিশ্ববাজারে তেলের দাম, গ্যাসের দাম, সবকিছুর মূল্য বেড়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাই আপনারা সাশ্রয়ী হবেন। বিদেশে এমনকি লন্ডনেও প্রায় দেড়শ ভাগ বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। আমরা কিন্তু যে টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করি, তার অর্ধেক মূল্যে দিচ্ছি মানুষের কাছে। আর সেচ কাজের জন্য আমরা ২০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে দিচ্ছি। পাশাপাশি সোলার প্যানেলের মাধ্যমে যেন সেচ কাজ হয়, সে পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তবে যে কথা দিয়েছিলাম ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেব, সব ঘর আলোকিত করব, সেটা আল্লাহর রহমতে করতে পেরেছি। আপনারাই সে শক্তি দিয়েছেন।’ এর আগে আজ শনিবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে কোটালীপাড়ার তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জনসভার মঞ্চে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগেই জনসভাস্থল মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে দলের প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে জনসভার মঞ্চ। এ জনসভায় প্রায় ২০ লাখ মানুষের সমাগম হওয়ার আশা প্রকাশ করেন নেতাকর্মীরা। জনসভাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখা হয় পুরো জেলা। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে কোটালীপাড়া উপজেলায় সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে জনসভাস্থল। স্থানীয় নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে কোটালীপাড়া-ভাঙ্গারহাট রোডের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। নেতাকর্মীদের মধ্যে দারুণ উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।