আলমগীর হোসেন ও মিজানুর রহমান, দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপি দীর্ঘ ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময় বা সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। এক যুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকায় সারাদেশে দলটির নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ নিস্কিয় হয়ে পড়েছে। দলের ভিতর অভ্যন্তরীন কোন্দলও বেড়েই চলছে। সেই সাথে নেতৃত্ব সংকটে ভুগছে তারা। ফলে দীর্ঘ চার দশকের মধ্যে সবেচেয়ে কঠিন ‘গ্যাঁড়াকলে’ বিএনপি।

এদিকে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ ঘিরে হামলা ও সংঘর্ষের পর হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। প্রতি দিনই যানবাহনে অগ্নিকাণ্ড ও নাশকতার ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা, হামলা, বাড়িতে বাড়িতে অভিযান এবং গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে।

এছাড়া পুরোনো মামলায় প্রথম এবং দ্বিতীয় সারির নেতারা দণ্ডিত হচ্ছেন। ফলে গ্রেপ্তার এড়াতে সব পর্যায়ের নেতারা চলে গেছেন অত্মগোপনে। ফলে আন্দোলনে উত্তাপ ছড়াতে পারছে না দলটি। সার্বিক এমন পরিস্থিতিতে কঠিন সময় পার করছে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি। এমন পরিস্থিতিতে আন্দোলনের কৌশল বদল করে সেখান থেকে উত্তরণের পথের সন্ধান করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এদিকে নির্বাচনের আগে ‘কিংস পার্টি’ নিয়েও বিপাকে পড়েছে বিএনপি। এ পার্টিতে বিএনপি নেতাদের ভাগিয়ে নেয়া হতে পারে এমন শঙ্কাও রয়েছে তাদের। কয়েক দিন আগেও গুঞ্জন ছিল দলটির অনেকে বিএনএম ও তৃণমূল বিএনপির হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন। এ দলগুলোর জোট হবে আগামী সংসদে প্রধান বিরোধী দল। তবে আশানুরূপ কোনো ফল চোখে পড়েনি।

বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাজার প্রসঙ্গ টেনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবি রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ফের একতরফা নির্বাচন করবে। বিএনপি যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য একের পর এক বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সাজা দেয়া হচ্ছে। তারা চাচ্ছে যেনতেনভাবে আরেকটি নির্বাচন করতে।

সে কারণে এমনটা করা হচ্ছে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে না। পৃথিবীর দেশে দেশে স্বৈরাচারী এবং ফ্যাসিবাদী সরকাররা যে কাজগুলো করে বিরোধী দলকে নির্মূল করা সেই কাজটি শেখ হাসিনা করছে। এর অংশ হিসেবেই বিএনপির সিনিয়র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের সাজা দেয়া হচ্ছে।

রিজভী বলেন, এক দফা দাবিতে চলমান কর্মসূচি চলতে থাকবে। শেখ হাসিনা দাবি মেনে নিলে আমাদের এ কর্মসূচি আর থাকবে না। আমাদের দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা কায়েম করতেই হবে। আমাদের এ আন্দোলন চলছে এটা অব্যাহতভাবে চলবে। মামলা-হামলা গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আমরা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যোগাযোগ হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। হয়তো অনেক নেতা গ্রেপ্তার আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছেন, কিন্তু সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে।

নেতৃত্বের সংকটের কোনো সম্ভাবনা নেই। সরকার পতনের এক দফা যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল ও জোট নিয়েও ভাবতে হচ্ছে বিএনপিকে। কদিন আগেও যারা বিএনপির সঙ্গে হাতে হাত রেখে সরব থেকেছেন রাজপথের আন্দোলনে। সভা সমাবেশে গলা উঁচিয়ে চিৎকার করে সরকারের বিরুদ্ধে দিয়েছিলেন হুমকি-ধমকি। বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনে যাওয়াকে আত্মহত্যার শামিলও বলেছিলেন। তারাই আজ বিএনপিকে ছেড়ে যাচ্ছেন।

ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি আন্দোলন ছেড়ে ভোটের পথে পা বাড়িয়েছেন। গুঞ্জন রয়েছে যুগপৎ আন্দোলনের থাকা আরও কিছু ‘ওয়ান ম্যান পার্টির’ নেতারা প্রকাশ্যে এসে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিবেন। তাদের মধ্যে-নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদের) নেতা আ স ম আব্দুর রবের নাম রয়েছে জোর আলোচনায় ছিল।

এদিকে, বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির নেতৃত্বে নতুন জোট যুক্তফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে গত বুধবার। আত্মপ্রকাশের দিনে দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে যুক্তফ্রন্ট। নতুন জোটে থাকা দলগুলো হলো বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি প্রতীক), বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমএল (হাতপাঞ্জা), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল প্রতীক)।

এদিন সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম নতুন জোটের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেয়ার কথা জানান। তিনি বলেন, আমরা আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হয়েছি। তিনি বলেন, এর জন্য আমরা একটি বড় ঝুঁকি নিচ্ছি। অতীতেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বড়-ছোট দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।

আমরা মাঠে দাবি আদায়ে সফল না হয়ে, বিকল্প পন্থায় ভোটে অংশ নিয়ে অবদান নিতে চাই। আশা করছি, এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ‘পেরে উঠছেন না’ জানিয়ে কল্যাণ পার্টির প্রধান বলেন, ১৬ বছরে অনেকেরই যোগ্যতা ও সাহস থাকার পরও সংসদে যেতে পারেনি। আমাদের সিদ্ধান্ত কারও পছন্দ হবে বা হবে না। আগামী কয়েক সপ্তাহ বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য সংকটময়।

বিএনপির কয়েকজন নেতা বলেন, বিএনএম ও তৃণমূল বিএনপিকে কেন্দ্র করে রানৈতিক মাঠে নানা তৎপরতা চলছে। এ দল দুটিতে যোগ দিতে বিএনপি কেন্দ্রীয় নেতাদের টার্গেট করা হয়েছে। তবে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে, এখন পর্যন্ত কোনো নেতাকেই ভেড়াতে পারেনি। ওয়ান-ইলেভেনেও বিএনপি ভাঙার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, কিন্তু তা সফল হয়নি। এখন বিএনপি নেতাকর্মীরা আরও ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন।

তারা আরও জানান, ছোট ছোট দল নির্বাচনে গেলেও ভোটের হিসাবে যেসব দল ফ্যাক্টর তারা দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। তাদের মধ্যে বাম দলগুলোর বেশিরভাগ ও বড় ইসলামি দলগুলো রয়েছে। নানা ভয়ভীতি ও প্রলোভনে পড়ে ছোট ছোট রাজনৈতিক দল হয়তো নির্বাচনে যাচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে বেশিরভাগ দলেরই তেমন নেতাকর্মী নেই। আন্দোলন সফলে দরকার সাংগঠনিক শক্তি। যেসব দল নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের মাঠে সেই শক্তি রয়েছে। সুতরাং এ নিয়ে তারা চিন্তিত নন।

এদিকে গত রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১০ বছর আগে পুলিশের করা একটি মামলায় দেয়া রায়ে বিএনপির মিরপুর এলাকার চারজন নেতার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ঢাকার আদালতে গত তিন মাসে ৩১টি মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের অন্তত ৫৪৫ জনের সাজা হলো। অবশ্য এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের একাধিক মামলায়ও সাজা হয়েছে। দলের নেতাদের পুরোনো মামলায় যেভাবে সাজা দেয়া হচ্ছে এনিয়েও চিন্তিত বিএনপি। দলটির নেতারা বলছেন একতরফা নির্বাচন করার জন্যই বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের একের পর এক সাজা দেয়া হচ্ছে।

বিএনপি সূত্র জানায়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে কঠিন এক সময় পার করছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। মহাসমাবেশ-পরবর্তী মামলা, গেপ্তার, সাজা, ধারাবাহিক হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে পুলিশ এবং ক্ষমতাসীন নেতাকর্মীদের বাধা, দলের প্রধান কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়া, স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের মদদে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চিরুনি অভিযান এবং নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের হয়রানিতে সরকারবিরোধী এক দফার যুগপৎ আন্দোলনে কিছুটা ভাটা পড়েছে।

বিএনপি নেতাদের মনে করেন, সেসব ছোটখাটো দল নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেটা তাদের মাথাব্যথার কারণ নয়। নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপের বিষয়টিকে তারা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। নেতাদের স্পষ্ট বক্তব্য— শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে না, এখনো পর্যন্ত তারা এ দাবিতে অনড় আছে। তারা মনে করছে, বিএনপিতে যারা ‘অপ্রয়োজনীয়’, ‘নিষ্ক্রিয়’ কিংবা ‘গুরুত্বহীন’ ছিলেন তারা অনেক জায়গায় ভিড়েছে।

এদিকে বিএনপির ডাকা চলমান হরতাল-অবরোধ উত্তাপহীনভাবে চললেও দলটির নেতাদের ভাষ্য, তাদের চলমান আন্দোলনে জনগণের স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দিয়েছে। সামনে সরকার পতনের ধারাবাহিক যে আন্দোলন কর্মসূচি আসবে তা দেশের জনগণ সফল করবে। যে দাবি নিয়ে বিএনপি আন্দোলন করছে এটা শুধু বিএনপির দাবি নয়, গণতান্ত্রিক যে সংগঠনগুলো রয়েছে; যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে প্রত্যেকেরই এটা দাবি। এছাড়া বিদেশি গণতান্ত্রিক দেশগুলো এ দাবির প্রতি সমর্থন দিচ্ছে।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া বলেন, একদফা দাবিতে বিএনপির যে আন্দোলন চলছে এ দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আন্দোলন কখনো আপ হবে কখনো ডাউন হবে; এটাই নিয়ম। আন্দোলন জনগেই পালন করছে। সাধারণ মানুষের রাস্তায় কম বের হচ্ছে এতেই বুঝা যায় জনগণ এ আন্দোলনকে সমর্থন করছে।

যে দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন করছি এটা শুধু বিএনপির দাবি নয়, গণতান্ত্রিক যে সংগঠনগুলো রয়েছে; যারা গণতন্ত্র বিশ্বাস করে প্রত্যেকেরই এটা দাবি। এছাড়া বিদেশি গণতান্ত্রিক দেশগুলো এ দাবির প্রতি সমর্থন দিচ্ছে। সুতরাং আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে যাব। তারা যদি দাবি না মানে সেটা জনগণ দেখছে। ভবিষ্যতে জনগণে এটার বিচার-বিশ্লেষণ করবে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল বলেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি যত দিন আদায় না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আন্দোলনের মাধ্যমে সামাজিকভাবে যে একটা ইফেক্ট ফেলতে চেয়েছিলাম সেটা মানুষের মধ্যে এসেছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে যে ‘সহিংস ঘটনা’ ঘটল তা চিন্তায় ছিল না বিএনপির। মহাসমাবেশে জড়ো হওয়া জনসমাগমকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ছিল না পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক। তা ছাড়া মহাসমাবেশকে ঘিরে কিছু ঘটলে পরবর্তী সময়ে কী করা হবে— বিএনপির তরফে এমন কোনো নির্দেশনাও আগত নেতাকর্মীদের দেয়া হয়নি।

বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে মহাসমাবেশের জনসমাগকে নয়াপল্টন এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়ার মুহূর্তে মঞ্চ থেকে ২৯ অক্টোবরের হরতাল কর্মসূচিও তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষিত হয়। এর আগে বিএনপি ও তার সমমনাদের মধ্যে এ কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়নি। বিএনপি এখন যেসব কর্মসূচি দিচ্ছে, তাতে তাদের আন্দোলন সফল হওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বিএনপির দাবি, গত দেড় মাসে দলের ৫২৬ নেতাকর্মীর বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে বিএনপির ৩৮৫ জন নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে। এ সময় ১৩টি মামলায় আসামি হয়েছে এক হাজার ৪৮০ জনকে। গত ১৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে সারা দেশে ১৬৬ মামলায় আসামি ১৯ হাজার ৩১০, গ্রেপ্তার ৪ হাজার ৯৯৫, আহত ৬৮২ এবং নিহত হয়েছেন ৪ জন। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ৪৩৫ মামলায় গ্রেপ্তার ১৭ হাজার ১০, আহত ৪ হাজার ৭৩৮ এবং নিহত ১৭ জন।