দেশ প্রতিক্ষণ, ঢাকা: বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) তেজগাঁও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট চত্ত্বরে বুধবার জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা ২০২০-২০২৪ এর আওতায় গণশুনানী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব)।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিআরটিসি’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, স্টেকহোল্ডারগণ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদ কর্মী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীসহ আরো অনেকে। আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন মোহাম্মাদ সাইদুর রহমান (উপসচিব), জিএম (প্রশার ও পার্সোনাল) অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম (অতিরিক্ত সচিব)। স্বাগত বক্তব্যে তিনি প্রধান অতিথিসহ উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

এ সময় তিনি বলেন, এ অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য সেবার মানকে আর কি ভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা এবং সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে সমাধান করে বিআরটিসি’র সেবার মানকে বৃদ্ধি করা। ২০২১ সালের পূর্বে বিআরটিসি কখনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় ও সচিব মহোদয়ের নির্দেশনায় বিভিন্ন পলিসি গ্রহণের মাধ্যমে বর্তমানে বিআরটিসিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা হয়।

বিআরটিসি’র মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে সর্বোচ্চ সেবা প্রদান করা। সেবা প্রদানের পাশাপাশি লাভ করা, কেননা আয় করে বেতন দিতে হয়। পূর্বে নতুন গাড়ি আসা সত্ত্বেও কোন প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা পেত না বরং মাসের পর মাস কর্মচারীদের বেতন বকেয়া থাকত। ২০২৩ সালে দীর্ঘ ২৩ বছর পর বিআরটিসিতে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা প্রদান করা হয়। ইতোমধ্যে নগর পরিবহন সেবা, মেট্রোরেল সার্ভিস, পর্যটক বাস সার্ভিস সেবা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বাস সার্ভিস, স্মার্ট স্কুল বাস সার্ভিস সেবা চালু করা হয়েছে। ঢাকা শহরে শৃংঙ্খলা আনয়নে নগর পরিবহনের রুটে প্রচুর ঘাটতি নিয়ে বিআরটিসি বাস চলাচল করছে। তিনি বলেন, কোরিয়া থেকে ৩৪০টি সিএনজি বাস আসলে আরো উন্নত সেবা প্রদান সম্ভব হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী অনুষ্ঠানটি সুন্দর ভাবে আয়োজন করার জন্য বিআরটিসি’র চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় তিনি বলেন আজ আমরা সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে শুনবো। সেবার মানকে আর কি ভাবে বৃদ্ধি করা যায়, সেবা দেওয়াই বিআরটিসি’র মূখ্য উদ্দেশ্য। হরতাল অবরোধের মধ্যেও বিআরটিসি’র ৪০০ ট্রাকসহ অধিকাংশ বাস চলাচল করছে।

এ সময় গণশুনানিতে উপস্থিত ষ্টেক হোল্ডারগণ, প্রশিক্ষণার্থী, ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ যাত্রী, বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মী তাদের প্রশ্ন ও মতামত তুলে ধরেন। রো সেফটি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস খান বলেন, বিআরটিসি’র সেবার মান উন্নত হয়েছে জেনে আমি খুব খুশি হয়েছি। তিনি চালক এবং হেলপারদের মার্জিত ব্যবহারের জন্য অনুরোধ জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিক বলেন, বিআরটিসি’র লাল বাসে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই এটি খুবই ভালো লাগে। তিনি বিআরটিসি’র স্টাফ বাসে ভিটিএস চালু করার অনুরোধ জানান। মিডিয়াকর্মী এম শিমুল খান বিআরটিসি চালকদের ওভারটেকিং না করার পরামর্শ দেন। এবং একটি হটলাইন খোলার পরামর্শ দেন। অবশেষে বিআটিসি’র চেয়ারম্যান ও সচিব সেবা গ্রহীতাদের পরামর্শ গুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে বিআরটিসির চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, দক্ষ চালক তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিআরটিসি’র বিভিন্ন ডিপো/ইউনিটসহ বাস এবং ট্রাক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ড্রাইভার এবং হেলপারদের আচরণ পরিবর্তন করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

বিআরটিসি’র পরিচালক অর্থ ও হিসাব) ড. অনুপম সাহা (যুগ্মসচিব) প্রধান অতিথিসহ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সেবার মান বৃদ্ধি করার জন্য গণশুনানীর আয়োজন করে যে অভিযোগ ও পরামর্শ পাওয়া গেছে সে গুলো সচিব ও চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সমাধান করার চেষ্টা করা হবে। প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও শুদ্ধতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে সর্বোচ্চ লক্ষ্য পৌঁছানোর যে প্রয়াস সেটা অব্যাহত থাকবে। পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।