তৈয়্যবুর রহমান (তুহিন), চরফ্যাশন, ভোলা: মেধাবী,দক্ষ, ত্যাগী, যোগ্য, সৎ আর পরিশ্রমী একজন আদর্শবান নেতার সঠিক নেতৃত্বই একটি দেশ তথা একটি জাতিকে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছাতে সাহায্য করে। কিন্তু সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে পৌঁছানোর জন্য নেতার একটি সুন্দর ও একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা উচিত। অনেক রাজনৈতিক নেতাই নিজ এলাকায় এসে কিছু টাকা কিংবা বড় বড় রাজনৈতিক পদবী বা প্রশাসনিক ক্ষমতার বলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য দরিদ্র সাধারণ জনগণকে ব্যবহার করে।

বেশির ভাগ সময়ই দরিদ্র সরল মানুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে তাদের ভোটে এমপি হয়ে সরকারি নানা রকম সুযোগ-সুবিধা প্রয়োগ করে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে বিশাল সম্পদের মালিক বনে যান। হয়ে যান ভিআইপি কিংবা সিআইপি। আবার কিছু কিছু মানবিক গুণাবলীর মানুষ রয়েছেন,যারা নিঃস্ব অবস্থা থেকে সততা পরিশ্রম এবং ত্যাগের মাধ্যমে ধীরে ধীরে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন।

শিল্প-প্রতিষ্ঠানের উপার্জিত অর্থ-বিত্ত নিজের প্রয়োজনে ভোগ না করে দরিদ্র নিরীহ জনগণের মাঝে নিঃস্বার্থভাবে বিলিয়ে দিয়ে মানসিক তৃপ্তি পান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই প্রকৃতির মানুষ খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে তাঁরা যদি কোনো কারণে জনগণের ভোটে নির্বাচিত কোনো জনপ্রতিনিধি হতে পারেন, তখন তাঁদের ধ্যান,জ্ঞান এবং পরিকল্পনা থাকে এলাকার রাস্তাঘাট নির্মাণ এবং মেরামত, স্কুল-কলেজ,মসজিদ-মাদ্রাসাসহ দরিদ্র অসহায় জনগণের সঠিক উন্নয়ন করা। তাঁদের নিজস্ব ব্যবসায়ী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি থাকায় সরকারি সম্পদ বা অর্থ লুটপাট করার কোনো পরিকল্পনা তাদের থাকে না। বরং সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি নিজের উপার্জিত অর্থও জনগণের সেবায় নিয়োজিত করেন।

বাংলাদেশের সংসদীয় আসন ১১৭-ভোলা- ৩ নির্বাচনী এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন তেমনি একজন মানুষ।ভোলা ৩-(লালমোহন ও তজুমদ্দিন) এলাকার বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এর অভাবনীয় উন্নয়ন কর্মকান্ডের কিছু বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য এই লিখা। আমরা সবাই জানি একজন মানুষ মহান হয়ে উঠে তার কৃতকর্মের মাধ্যমে।

কিন্তু তার জন্য দরকার হয় বিধাতার রহমতের এবং মানুষের ভালবাসার। মায়ের গর্ভ হতে ভূমিষ্ট হওয়ার পর সারাজীবন কি কর্ম করলো এটাই তার ভালমন্দের বিচারের মাপকাঠি। তার জন্ম ভাল জায়গায় হোক কিংবা খারাপ জায়গায় হোক এটা দেখার বিষয় না। কথাই আছে “জন্ম হোক যথাতথা কর্ম হোক ভাল”। যে কোন মানব সন্তান কর্ম দ্বারা ব্যাপকভাবে সুনামের অধিকারী হতে পারে আবার কর্ম দ্বারা ব্যাপকভাবে বদনামের অধিকারীও হতে পারে। এটাও সত্য প্রত্যেকটা লোকেরই ভালমন্দ উভয় কর্মই রয়েছে।

সেক্ষেত্রে দেখতে হবে তার মন্দটা ইচ্ছেকৃত নাকি অনিচ্ছাকৃত কিংবা একজনের মন্দ করতে গিয়ে দশজনের উপকার হচ্ছে কিনা। কিছু কিছু গুণ বা ভাল কাজ মানুষকে আজীবন স্মরণীয় করে তুলে। আর তা বহমান থাকে মৃত্যুর পরেও অনাধিকাল পর্যন্ত। যুগ যুগ ধরে মানুষ তাকে স্মরণে রাখে ভাল কাজের জন্য। আর তার অবর্তমানে আক্ষেপ করে তাকে হারানোর জন্য। পাশাপাশি খুঁজে বেড়ায় মানবসেবক ঐ লোকটির মতো আর একজন গুণী মানুষকে। দুনিয়ার সবচাইতে সত্য কথা হচ্ছে মানব সেবা ছাড়া এই দুনিয়ার কোন মানুষ কোনকালেও মানুষের মনের ভালবাসা পায় নাই।

এমনকি মানবসেবা না করলে আল্লাহর ভালবাসা পাবার কথাও চিন্তা করতে পারে না। এই সকল মানব সেবক আল্লাহর অশেষ রহমতে হঠাৎ করে দীর্ঘকাল পরপর একেক অঞ্চলে ভাগ্যগুণে আর্বিভুত হয়। এই সকল সমাজসেবক, জনদরদী মানুষগুলো এলাকার অসহায় হতদরিদ্র মানুষের আর্শিবাদ স্বরূপ আরোহন করে থাকে। তেমনি একজন মানুষ হলেন ভোলা-৩ আসন ( লালমোহন ও তজুমদ্দিন) নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।

লালমোহন তজুমদ্দিন উপজেলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের রূপকল্প পরিকল্পনা নিয়ে ১৯৯৬ সাল থেকে অসহায় গরীব দুঃখী মানুষকে সাহায্য ও সহযোগিতা করার মাধ্যমে লালমোহন তজুমদ্দিন উপজেলায় পদার্পন করেন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। স্বল্প সময়ে নিজ কর্মের গুণে মানুষের খুবই আপন ও জনপ্রিয় মানুষ হয়ে উঠেন। পরবর্তী সময়ে ২০১০ সালে জাতীয় সংসদ উপনির্বাচনে ভোলা-৩ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পাল্টে ফেলেন হাজার বছরের অবহেলিত লালমোহন তজুমদ্দিন উপজেলার জরাজীর্ণতা।

বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এবং নুরুন্নবী চৌধুরানী শাওনের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রমের একজন সুবিধাভোগী হিসেবে উনার উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলো সাধারণ জনগণকে তুলে ধরা নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেই আমার এই ক্ষুদ্র লিখা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৮৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির ভাই চেয়ারম্যান মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আবার তিনি মন্ত্রীও হয়েছেন কয়েকবার।

২০১০ সালে জাতীয় সংসদ উপ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরার পূর্বে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অন্যদের উন্নয়ন কার্যক্রম সামান্য তুলে না ধরলে হয়তো পাঠকগণ তারতম্য নির্ণয় করতে পারবেন না। ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দ্বারা ধ্বংস হওয়া বাংলাদেশকে এবং এদেশের মানুষের খাদ্য, বস্ত্র এবং বাসস্থানের বন্দোবস্ত করার জন্য জাতির জনক দেশে-বিদেশে ব্যাপক গণসংযোগ করেন।

ধীরে ধীরে কর্মসংস্থান, যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ ইত্যাদি কাজগুলোর মেরামতের ব্যবস্থা করেন। সবকিছু যখন সমাধান করে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ঠিক তখন দেশী বিদেশী কিছু কুলাঙ্গার ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করেন। শেখ মুজিবকে হত্যা করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলে নিয়ে গণতন্ত্র হত্যা করেন। শুরু হয় হত্যা দুর্নীতি আর লুটপাট। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পরে দুর্নীতি আর লুটপাট।

শহর থেকে গ্রামে, বিভাগ থেকে জেলা এবং জেলা থেকে উপজেলায় সর্বত্রই শুরু হয় দুর্নীতি এবং লুটপাট। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত বাংলাদেশের জন্য যা বিদেশী অনুদান সংগ্রহ করে দেশ গড়ার জন্য যুদ্ধে নেমেছিলেন জাতির জনককে হত্যা করে লুটপাটে ব্যস্ত হয়ে পরে তৎকালীন অবৈধ সরকার। সারা বাংলাদেশের প্রত্যেক উপজেলার মতো লালমোহন তজুমদ্দিন উপজেলায়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। মেজর জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আশীর্বাদে ভোলা-৩ লালমোহন তজুমদ্দিন উপজেলা হতে ১৯৮৬ সাল থেকে টানা পাঁচবার মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে জিয়ার সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কিন্তু লালমোহন ও তজুমদ্দিনবাসীর ভোটের সামান্য মূল্যায়নও করেন নাই তিনি। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজে এবং আত্মীয় স্বজনদের মাধ্যমে দুর্নীতি ও লুটপাট করিয়েছেন। লালমোহন তজুমদ্দিনবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনে ২০১০ সালের জাতীয় সংসদ উপনির্বাচনে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন নির্বাচিত হয়ে পূর্বের সংসদ সদস্যের ফেলে আসা অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করার চেষ্টা করেন। এরপূর্বেও নূরনবী চৌধুরী শাওন, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রিয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এই রাজনীতির ধারাবাহিকতায় নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন নিজ মাতৃভূমি ভোলা জেলার লালমোহন তজুমউদ্দিন উপজেলায় সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরেন। তার পৈত্রিক বাড়ি লালমোহন উপজেলায়। তার পিতার নাম মরহুম আলহাজ্ব নূরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী, দানবীর ও সমাজসেবক ও দেশপ্রেমিক মানুষ,আর তাই ছোট থাকতেই দেশের জন্য বাবার আত্মত্যাগ দেখতে দেখতে বড় হয়েছেন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।

যোগ্য বাবার যোগ্য উত্তরসুরী হওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে অল্প বয়সেই রাজনীতিতে সফলতা লাভ করেন। একজন সফল রাজনীতিবিদ হওয়ার পর আবারও আত্মনিয়োগ করেন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে। নিজ প্রতিভায় সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলেও অতি দ্রুত সফল হয়ে উঠেন। ২০১০ সালে ভোলা (৩) লালমোহন ও তজুমদ্দিন নির্বাচনী এলাকা হতে উপনির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতিকে বিপুল ভোটে এমপি নির্বাচিত হন।

এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর হতেই এলাকার উন্নয়নে সরকারী,বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা এবং ব্যক্তিগত অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলাকে একটা আধুনিক ডিজিটাল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালান। ইচ্ছে থাকলে উপায় হয় এবং চেষ্টা করলে সফল হয়। এ কথাগুলোর সত্যতার প্রমাণ করলেন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন,তার ভিতরে প্রতিহিংসার রাজনীতির ছোঁয়াও নেই।

নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন দীর্ঘ ১০ বৎসর ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় কোন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় একটাও মামলা হয়েছে বলে কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না। লালমোহন তজুমউদ্দিন উপজেলার এমন কোন ইউনিয়ন কিংবা গ্রামে একটা চাঁদাবাজি হয়েছে বলে কেউ বলতে পারবে না।

মাদকসেবী এবং মাদক ব্যবসায়ীর ব্যাপারে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়েছিলেন । তিনি প্রশাসনকে এমনও নির্দেশ দিয়ে রেখেছেন- মাদক ব্যবসায়ী বা মাদকসেবী ধরা পরলে তার সুপারিশ করার জন্য উনার দলের যতবড় নেতাই সুপারিশ করতে আসুক না কেন আসামীর সাথে যেন সুপারিশকারীকেও আইনের আওতায় এনে সাজার ব্যবস্থা করেন।

এরি ধারাবাহিকতায় ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার সভা, সমাবেশ ও সেমিনারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সারা বাংলাদেশের নানা প্রকার উন্নয়নের গুণগান ফিরিস্তি গেয়ে মুখে ফেনা তুলছেন। উন্নয়ন মানে তো জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন,শাওনের উন্নয়ন মানে তো আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন। লালমোহন তজুমদ্দিন উপজেলার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনকে আবারও এমপি নির্বাচিত করুন, নৌকার নিশ্চিত বিজয়ের জন্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের বিকল্প নেই।