দেশ প্রতিক্ষণ, বরিশাল: বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে সাদিক আবদুল্লাহর নির্বাচন করতে কোনো বাধা নেই। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

দ্বৈত নাগরিকত্ব প্রশ্নে ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা রিটের শুনানি শেষে আদালত এ আদেশ দেন। আদালতে সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। এর আগে গত ১৫ ডিসেম্বর বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনের আপিল শুনানিতে এই রায় দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আওয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন।

দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে তার প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল করেন একই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কর্নেল জাহিদ ফারুক। অন্যদিকে জাহিদ ফারুক মামলার বিষয়ে তথ্য গোপন করেছেন অভিযোগ তুলে তার প্রার্থিতা বাতিলের আপিল করেছিলেন সাদিক আব্দুল্লাহ। সেই আপিল নামঞ্জুর করা হয়। ফলে জাহিদ ফারুকের প্রার্থিতা বহাল থাকে।

এর ফলে বরিশাল সিটির সাবেক মেয়রের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে আর কোনো বাধা থাকলো না। আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়ে না পাওয়ায় বরিশাল-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সাদিক আবদুল্লাহ। বরিশাল সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নিয়ে গঠিত আসনটিতে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। দলের প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন সাদিক। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাঁর মনোনয়ন বৈধও করেন। কিন্তু জটিলতা বাধে পরে।

সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেন জাহিদ ফারুক। তার অভিযোগ, সাদিক আবদুল্লাহর রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিকত্ব এবং হলফনামায় তিনি সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

গত জুনে অনুষ্ঠিত হওয়া বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হন সাদিক আব্দুল্লাহ। এর আগে নৌকার মনোনয়নে বরিশালের মেয়র হয়েছিলেন তিনিই। সাদিকের বাবা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বরিশাল-১ আসনের দলীয় প্রার্থী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ।

২০২৩ সালে বরিশালের সিটি নির্বাচনে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে সরিয়ে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয় তার ছোট চাচা আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে (খোকন সেরনিয়াবাত)। তিনি নির্বাচিতও হয়েছেন। এরপর চাচা-ভাতিজার দ্বন্দ্ব নিয়ে সারা দেশে আলোচনা তৈরি হয়। ওই সিটি নির্বাচনে বর্তমান এমপি জাহিদ ফারুকের অনুসারীরা সার্বক্ষণিক আবুল খায়ের আবদুল্লাহর পাশে ছিলেন।