এস এম নুরুজ্জামান: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে এ দেশের গণমানুষের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি দেশ স্বাধীন হওয়ার পরই বীমা খাত সংস্কারে হাত দেন। বঙ্গবন্ধুর সেই প্রচেষ্টার ফলাফল আজকের এই বীমা খাত। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের কাতারে শামিল হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় প্রত্যয়ে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক উন্নয়নের এই পথ পরিক্রমায় বীমা অন্যতম অনুসঙ্গ। তাই বর্তমান সরকারও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে বীমা খাতের উন্নয়নে। ’১ মার্চ’কে ঘোষণা করেছে জাতীয় বীমা দিবস।

জাতীয় বীমা দিবসকে সামনে রেখে আমি গভীরভাবে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি বীমা পেশায় ছিলেন বলেই আমরা পেয়েছি জাতীয় বীমা দিবস। এই বীমা দিবস সকল বীমা পেশাজীবীর একটি আনন্দের দিন। এবারের বীমা দিবসের শপথ হোক ‘দ্রুত বীমা দাবি পরিশোধ’।

আভিধানিক অর্থে ক্লেইম (ঈষধরস) হলো: দাবি উত্থাপন করা, শর্তানুসারে প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ চাওয়া ইত্যাদি। কিন্তু জীবন বীমার ক্ষেত্রে ক্লেইম বলতে বীমা গ্রহীতার জীবনের কোন ক্ষতি বা বীমা গ্রহীতার মৃত্যুতে বীমাকারী কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষতিপূরণকে বুঝায়। জীবন বীমার ক্লেইম বা দাবি কয়েক প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন: মেয়াদোত্তর দাবি, মরণোত্তর দাবি, অঙ্গহানী বা বিকলাঙ্গ দাবি, প্রত্যাশিত দাবি, গুরুতর অসুস্থতা দাবি ইত্যাদি।

কোন ব্যক্তি বীমা গ্রহণের পর বীমা চলাকালীন দুর্ঘটনার কারণে স্থায়ীভাবে পঙ্গু বা অঙ্গহানী ঘটলে বীমার শর্তানুযায়ী বীমাকারী কর্তৃক যে দাবি পরিশোধ করা হয় তাকে অঙ্গহানী বা বিকলাঙ্গ দাবি বলে। বীমা গ্রহীতাকে মেয়াদপূর্তিতে যে দাবি পরিশোধ করা হয় তাকে মেয়াদোত্তর দাবি বলা হয় এবং বীমা গ্রহীতার মেয়াদকালীন বীমা চালু অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে তার মনোনীতককে বীমাকারী কর্তৃক যে আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হয় তাকে মরণোত্তার দাবি বলে।

বীমা দাবি পরিশোধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানির নির্ধারিত অনেকগুলো চাহিদার প্রয়োজন হয় সেখানে ‘জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড’ অনেকগুলো চাহিদার পরিবর্তে কমসংখ্যক চাহিদার ভিত্তিতে মাত্র ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে গ্রাহকের দাবি পরিশোধ করে থাকে। উল্লেখ্য যে, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিয়মানুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে দাবি পরিশোধের কথা থাকলেও কয়েকটি বীমা কোম্পানি ২/৩ বৎসরেও দাবি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, যা গ্রাহক সেবার অন্তরায়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বীমা দিবসের উদ্বোধন করে আমাদের এই বীমা পেশাকে গৌরবান্বিত এবং অলংকৃত করেছেন। বীমা দিবসে সরকারিভাবে র‌্যালী, সভা-সমাবেশ হচ্ছে, বীমা দিবস নিয়ে টিভিতে টকশো হচ্ছে, জাতীয় পত্রিকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রচারণা হচ্ছে। ফলে বীমার গুরুত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে কোম্পানি যত দ্রুত দাবি পরিশোধ করবে সে কোম্পানি আগামী দিনে বীমা খাতের নেতৃত্ব দিবে।

‘জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটিড’ বিএফটিএন, বিকাশ, রকেট, নগদসহ মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে দ্রুত দাবি পরিশোধ করে থাকে। আপনারা জেনে খুশি হবেন, শুরু থেকেই জেনিথ ইসলামী লাইফ অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে বীমা দাবি পরিশোধ করে আসছে। ‘জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড’ ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত বীমা দাবি ও পলিসি বিনিয়োগ বাবদ ৬ হাজার ৩৯ জন বীমা গ্রাহককে প্রায় ২২ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

শিক্ষিত জাতি গড়তে সরকার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারের সেই প্রচেষ্টার সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। গ্রুপ বীমার অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে জেনিথ লাইফ এরইমধ্যে দেশের ৪টি স্বনামধন্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বীমা সেবা দিয়ে আসছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ৪৪ হাজার শিক্ষার্থীকে অনলাইনের মাধ্যমে গ্রুপ জীবন ও স্বাস্থ্য বীমা চুক্তির আওতায় বীমা সুবিধা প্রদান করে আসছে জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। বীমার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বীমা দাবি পরিশোধের বিষয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডও বীমা দাবি পরিশোধকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে চলেছে। পরিশেষে আমি মনে করি ‘করবো বীমা গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ এই স্লোগানের ভিত্তিতে এবার বীমা দিবসে আমাদের অঙ্গীকার হোক ‘দ্রুত বীমা দাবি পরিশোধ’। লেখক: মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও সেক্রেটারি জেনারেল (ভারপ্রাপ্ত), বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম।